ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রেশন দুর্নীতির অভিযোগে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। ইডির হাতে গ্রেপ্তার প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick)। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে এল রেশন বণ্টন (Ration distribution) নিয়ে এ রাজ্যের খাদ্যদপ্তরের ভূমিকায় কেন্দ্র সরকারের হাতখোলা প্রশংসাসূচক চিঠি। রাজ্যের রেশন ব্যবস্থাকে ক্লিনচিট দিয়ে খাদ্যমন্ত্রক সম্প্রতি সেই চিঠি পাঠিয়েছে। রেশন বিলি প্রক্রিয়া মসৃণ করতে যেভাবে সমস্ত কার্ড ডিজিটাইজড (Digitised) করার দিকে গিয়েছে রাজ্য, সেই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও একটি দিক উল্লেখযোগ্য। কোন মাসে কতটা রেশন বিলি হল, কতটা বাকি থেকে গেল, সেই বিস্তারিত তথ্য কেন্দ্র সরকারের পোর্টালে তুলে দিতে হয়। এই কাজে ফাঁক থাকলে পরের মাসের খাদ্যসামগ্রী পাঠায়ই না কেন্দ্র। প্রশংসার সেই চিঠিতে কেন্দ্র জানিয়েছে, প্রত্যেক মাসে নির্ভুলভাবে সেই তথ্য জানাতে পশ্চিমবঙ্গের খাদ্য দপ্তর নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
এই চিঠি এমন সময় এসে পৌঁছেছে যখন রেশনে সামগ্রী বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে বিজেপি-সহ (BJP) সমস্ত বিরোধীই খাদ্যদপ্তরের দিকে আঙুল তুলছে। এ নিয়ে সোমবার দিনভর কলকাতায় (Kolkata) খাদ্য ভবনের সামনেও বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস ও সিপিএম। তারা বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের পদত্যাগ দাবি করে। এর মধ্যেই কেন্দ্রের প্রশংসাসূচক চিঠি কার্যত পালটা চাপে ফেলে দিল বিজেপি-সহ রাজ্যের বিরোধী দলগুলিকে।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই দিল্লিতে দপ্তরের একটি সম্মেলনে গিয়েছিলেন মন্ত্রী রথীন ঘোষ (Rathin Ghosh)। সেখানে কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলও ছিলেন। রাজ্যের বিপুল চাহিদা ও তার মোকাবিলায় সুষ্ঠু বিলি-বণ্টন নিয়ে রাজ্যের যাবতীয় প্রক্রিয়ার কথা শুনে সেই সম্মেলনেই মৌখিক প্রশংসা করেছিলেন পীযূষ গোয়েল।
এর পরই আসে প্রশংসার চিঠি। তাতে জানানো হয়, হাতেহাতে রেশন সামগ্রী বিলির বদলে গোটা প্রক্রিয়াকে যেভাবে রাজ্য ডিজিটাইজ করেছে তাতে বাংলার নিরলস পরিশ্রমের ছবি উঠে এসেছে। কেন্দ্র সরকার ইতিমধ্যে সেই কাজে উদ্যোগী হয়েছে। হাতে হাতে বা ‘ম্যানুয়াল ডিস্ট্রিবিউশন’ কোথাও হচ্ছে কি না, তা কেন্দ্রের ‘অন্নবিতরণ’ পোর্টালে নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক।
মে মাস থেকে তার মাধ্যমেও বিলি ব্যবস্থায় নজরদারি চালাচ্ছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের যে পোর্টালের কথা বলা হয়েছে, সেখানে প্রতি তিন মাসের হিসাব তথ্য সহকারে জানাতে হয়। তাতেও বাংলার ভূমিকা প্রশংসাসূচক। রাজ্যে এই মুহূর্তে ৯৭ শতাংশ গ্রাহকের KYC হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। রথীন ঘোষের বক্তব্য, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দপ্তরে একাধিক বিষয়ে সংস্কার করা হয়েছে। তারই অন্যতম উল্লেখযোগ্য প্রক্রিয়া রেশন কার্ডের ডিজিটাইজেশন। সঙ্গে রেশন বিলির প্রক্রিয়া ১০০ শতাংশ নির্ভুল করার জন্য লাগাতার কাজ চলছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.