সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই দিল্লিতে মহিলা সাব ইন্সপেক্টর খুন রহস্যের কিনারা করল পুলিশ। কোনও দুষ্কৃতী নয়, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে প্রীতিকে গুলি করেছে আরেক পুলিশ কর্মীই। পরে সে হরিয়ানার সোনেপতে ফিরে আত্মহত্যা করে। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। বলিউডের রোমান্টিক-থ্রিলারকেও হার মানিয়েছে এই দুই পুলিশ অফিসারের প্রেম-প্রোপোজ-ব্যর্থতা থেকে খুন-আত্মহত্যার ঘটনা।
দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী অফিসার এস ডি মিশ্র জানিয়েছেন, পূর্ব দিল্লির প্রতাপগঞ্জ শিল্পাঞ্চল থানায় কর্মরত ছিলেন প্রীতি। তিনি আদতে হরিয়ানার সোনিপতের বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে ডিউটি শেষে রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ মেট্রো করে রোহিণীতে আসেন প্রীতি। ওই এলাকাতেই একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন তিনি। মেট্রো থেকে নেমে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দীপাংশু তাঁর রাস্তা আটকে দাঁড়ান। সেখানে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই চেঁচামেচি করতে করতে দীপাংশু বন্দুক বের করে প্রায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে প্রীতির মাথা লক্ষ করে পরপর তিনবার গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তরুণী পুলিশ অফিসার। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনটি কার্তুজের খোল উদ্ধার করেছে। পুলিশের সন্দেহ, নিজের সার্ভিস রিভলভার দিয়েই প্রেমিকাকে খতম করার পর নিজের মাথাতেও ওই বন্দুক দিয়েই গুলি চালান দীপাংশু।
প্রীতি ও দীপাংশুর সম্পর্ক, ঘনিষ্ঠতা ও ঝগড়ার কারণ জানতে দু’জনেরই বন্ধু ও সহকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। প্রীতির বন্ধুরা পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রীতি ও দীপাংশু একসঙ্গে পুলিশ অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন। ২০১৮ সালে দু’জনেই সাব ইন্সপেক্টর পদে কাজে যোগ দেন। প্রশিক্ষণের সময় থেকেই প্রীতির প্রেমে পাগল ছিলেন দীপাংশু। কিন্তু তাঁকে বিশেষ পছন্দ করতেন না প্রীতি। দীপাংশুর প্রেমের প্রস্তাব একাধিকবার নাকচও করে দেন। সম্প্রতি প্রীতিকে ফের বিয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। কিন্তু তা মানেননি প্রীতি। সেই আক্রোশ থেকে প্রতিশোধ নিতেই প্রেমিকাকে খতম করে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন ‘রোমিও’ দীপাংশু।
যদিও দীপাংশুর বন্ধুদের গলায় অন্য সুর। তাঁদের বক্তব্য, প্রীতি ও দীপাংশুর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সাব ইন্সপেক্টর হিসাবে দু’জনে আলাদা আলাদা থানায় কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকেই প্রীতি ক্রমশ সম্পর্ক থেকে সরে যেতে থাকেন। অন্য কারও সঙ্গে তাঁর এই সময় সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল কি না তা নিয়ে সন্দেহও করতেন দীপাংশু। বন্ধুদের দাবি, প্রীতি সম্প্রতি দীপাংশুকে পুরোপুরি এড়িয়ে যেতেন। তাঁর ফোনও ধরতেন না। এতে ভয়ানক ক্ষেপে গিয়েছিলেন প্রেমিক পুলিশ অফিসার। প্রীতির অন্য কোনও বয়ফ্রেন্ড ছিল কি না সে ব্যাপারেও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রয়োজনে তাঁর থানার সমস্ত সহকর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.