সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির বাসিন্দা ৩০ বছরের এক ব্যক্তি মদ্যপানের জন্য এক পানশালায় যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে প্রথম ড্রিঙ্কটি শেষ করার আগেই তাঁর যা অভিজ্ঞতা হল, ভবিষ্যতে তিনি আর কোনওদিনই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে এখন সংশয় দেখা দিয়েছে।
কী এমন হয়েছিল পানশালায়?
এই ঘটনার বিবরণ শুনলে চমকে উঠতে হয়। ককটেল ভেবে দিল্লির ওই বাসিন্দা তরল নাইট্রোজেনের গ্লাসে চুমুক দিয়ে ফেলেন। প্রথম দর্শনে তিনি ভেবেছিলেন, ককটেলের উপর থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে, সেটা বোধহয় পানীয়টিরই বিশেষত্ব। কিন্তু আসল ঘটনা হল, খাবার-দাবার ও পানীয় ঠান্ডা রাখতে ব্যবহৃত হয় তরল নাইট্রোজেন, যার স্ফুটনাঙ্ক প্রায় -১৯৫ ডিগ্রি। এমনকী, কমপিউটার ঠান্ডা রাখতেও সেটি ব্যবহৃত হয় কোথাও কোথাও। অজ্ঞানত, ওই মারাত্মক তরলের গ্লাসে চুমুক দিয়ে ফেলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি। সাত-পাঁচ না ভেবে প্রথম চুমুকেই একসঙ্গে অনেকটা ধোঁয়া ওঠা তরল গলায় ঢেলে ফেলেন। তারপরই তাঁর পেটে শুরু হয় অসহ্য যন্ত্রণা। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির পাকস্থলীতে একটি স্থায়ী ছিদ্র তৈরি হয়েছে।
প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গুরগাঁওয়ের কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালে ভরতি করা হয়। ওই ব্যক্তির চিকিৎসক অমিত দীপ্ত গোস্বামী জানিয়েছেন, তরল নাইট্রোজেন পান করে আক্রান্ত ব্যক্তির পেটের ভিতরে ব্যাপক রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, হাসপাতালে যখন আক্রান্তকে আনা হয়েছিল, তাঁর হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ ও রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ-সমস্তটাই ওলটপালট হয়ে ছিল। অক্সিজেনের অভাবে আক্রান্তর শরীরে বিপুল ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি হয়। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। ডাক্তার গোস্বামী বলছেন, “সিটি স্ক্যানে তলপেটে ব্যাপক ক্ষতির ইঙ্গিত মিলেছে। তাঁর অন্ত্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” বর্তমানে ওই ব্যক্তি বিপদমুক্ত। প্রায় দু’মাস তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর পেটের মধ্য ও নিম্নভাগ দু’দিকে বইয়ের পাতার মতো আলাদা হয়ে গিয়েছে। আক্রান্ত নিজে বলছেন, “জীবনে আর কখনও মদ্যপান করব না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.