সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রেমের কি করুণ পরিণতি! ভালবাসার মানুষটার সঙ্গে খুব ঝগড়া হয়েছিল রাতে। প্রসঙ্গ অবান্তর। অথচ অভিমান ছিল আকাশছোঁয়া। দু’-তরফেই। প্রেয়সী পারেননি শেষ পর্যন্ত তার চাপ সহ্য করতে। দিক-বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে হাত কেটে ফেলেন তিনি। তারপর সেই রক্তাক্ত হাতের ভিডিও করে, প্রেমাষ্পদকে পাঠান হোয়াটসঅ্যাপে। সঙ্গে সঙ্গে অন্য তরফে জ্বলে ওঠে আবেগের দাবানল। বাকরুদ্ধ, হতভম্ব প্রেমিক ছুটে আসেন প্রেমিকার কাছে। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রেয়সীকে পৌঁছেও দেন হাসপাতালে। শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু, নিজে আর পারেননি, প্রেমিকার কাটা হাত থেকে রক্ত চুঁইয়ে পড়ার সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্যের অভিঘাত হজম করতে। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে, কাঁদতে কাঁদতে, এক নার্সকে গোটা ঘটনা ব্যাখ্যা করতে করতেই আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। লুটিয়ে পড়েন মেঝেতে।
না। চিকিৎসকরা দ্রুত পদক্ষেপ নিলেও আর বাঁচানো যায়নি বছর তেইশের সেই যুবককে। ‘‘ওকে বাঁচান, নয়তো ও মরে যাবে’’, আকুতি জানাতে জানাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হতভাগ্য সেই প্রেমিক। প্রেয়সীর জীবন বাঁচিয়ে নিজে চিরবিদায় নিলেন পৃথিবী থেকে।
অপূর্ণ প্রেমের এই বিয়োগান্তক ঘটনা দিল্লির জগৎপুরী এলাকার। মৃত তরুণের নাম অর্জুন। তিনি চাঁদনি চক পার্ক এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। পুলিশসূত্রে খবর, প্রায় এক বছর আগে তরুণীর সঙ্গে অনলাইনে আলাপ হয় অর্জুনের। দু’জনে ডেটিং করতে শুরু করেন। বন্ধুত্ব ভালবাসার রূপ নেয় অচিরেই এবং তাঁরা প্রায়ই ঘুরতে-বেড়াতে যেতেন বলেই দাবি অর্জুনের বন্ধুদের। তবে তরুণী আইন নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন এবং সেই নিয়েই কেরিয়ার গড়তে আগ্রহী ছিলেন।
অন্যদিকে অর্জুন অতটা কেরিয়ার-সচেতন ছিলেন না বলেই পরিচিতদের দাবি। আর এই নিয়ে প্রায়ই যুগলের মধ্যে না কি প্রায়ই বাক-বিতণ্ডা হত। শুক্রবার রাতেও সম্ভবত তেমনই কিছু হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে তদন্তে মনে করছে পুলিশ। ওইদিন প্রেমিকার সঙ্গে কোনও একটি বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয় অর্জুনের। তরুণী এই ঘটনায় অত্যন্ত অপমানিত হন এবং দ্রুত সেখান থেকে চলে যান। তার পর অর্জুনও নিজের বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু বাড়ি গিয়েও অপমান ভুলতে পারেননি তরুণী। অর্জুনের উপর তাঁর অভিমানও হয়। তারই জেরে নিজের হাত কেটে ফেলেন তিনি। তার পর নিজের রক্তাক্ত হাতের ভিডিও করে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান অর্জুনকে। সেই ভিডিও দেখে তরুণ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।