সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: টানা লকডাউনে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল রাজধানী। তবে সোমবার থেক অনেকটাই স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে দিল্লি। রবিবার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কথায় অন্তত সে ইঙ্গিতই স্পষ্ট।
কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে দিল্লিতেও গত ১ জুন থেকে আনলক ওয়ান পর্ব চালু হয়েছে। কনটেনমেন্ট জোন ছাড়া বাকি এলাকায় খুলেছে দোকান-পাট, অফিস। তবে এতদিন পর্যন্ত বন্ধ ছিল সীমান্ত। আগামিকাল থেকে খুলে দেওয়া হচ্ছে সীমান্তও। তবে কিছু ক্ষেত্রে এখনও মিলবে না ছাড়। চলুন দেখে নেওয়া যাক, এদিন মুখ্যমন্ত্রী কী কী ঘোষণা করলেন।
- কেজরিওয়াল জানিয়ে দেন, সোমবার থেকে দিল্লির রেস্তরাঁ, শপিং মল এবং ধর্মীয় স্থান খুলবে। কিন্তু হোটেল কিংবা ব্যাংকোয়েট হল বন্ধই থাকবে। সেগুলি কবে খোলা হবে, সে নিয়ে পরবর্তীকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
- লকডাউনের মধ্যে মদের দোকান খোলার পরই ভিড় নিয়ন্ত্রণে আনতে মদের উপর ‘স্পেশ্যাল করোনা ফি’ বসিয়েছিল দিল্লি সরকার। এবার সেই ফি তুলে দেওয়া হল।
- খুলে দেওয়া হচ্ছে দিল্লির সীমান্ত। অর্থাৎ অন্য রাজ্যের মানুষের প্রবেশে আর বাধা রইল না। তবে শিথিলতার মধ্যেও প্রত্যেককে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “শিথিলতার মানে এই নয় যে করোনা বিদায় নিয়েছে। মাস্ক পরে আপনি অন্যের সাহায্য করেননি। এটা আপনার নিজের সুরক্ষার জন্য দরকার। খবর পাচ্ছি, অনেকেই এখনও মাস্ক ছাড়াই রাস্তায় বেরচ্ছেন।”
- এর পাশাপাশি বাড়ির বয়স্ক সদস্যদেরও বিশেষভাবে সচেতন হওয়ার আরজি জানান কেজরিওয়াল। খুব প্রয়োজন না হলে পরিবারের অন্যান্যদের সংস্পর্শে আসতে তাঁদের বারণ করেন তিনি।
- হাসপাতালে রোগী ভরতি নিয়েও এদিন বড় ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সাফ জানিয়ে দেন, আপাতত শুধুমাত্র রাজধানীতে বসবাসকারী করোনা আক্রান্তই দিল্লি সরকারের অধীনস্ত হাসপাতালে ভরতি হতে পারবেন। যে সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালে বিশেষ ধরনের চিকিৎসার সুবিধা রয়েছে, সেখানকার দরজা অবশ্য যে কোনও প্রান্তের রোগীর জন্য খোলা। তবে কেন্দ্রের অধীনে থাকা হাসপাতালে ভরতি হওয়ার ক্ষেত্রে এমন কোনও নিয়ম নেই। যে কোনও করোনা রোগীই ভরতি হতে পারবেন বলে পরিষ্কার করে দেন কেজরিওয়াল।
আসলে বিষেশজ্ঞরা মনে করছেন, জুনের শেষে কোভিড রোগীদের জন্য দিল্লির হাসপাতালে অন্তত ১৫ হাজার বেডের প্রয়োজন হবে। এমনিতেই রাজধানীতে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। শ্মশানে লাশের স্তূপ। তার উপর সীমান্ত খুলে দিলে যে সংক্রমণ বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য। সেই জন্যই হাসপাতালে ভরতি নিয়ে এই বিশেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপ সরকার।