বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, গান্ধীনগর: দেড়দশক পর হাতছাড়া দিল্লি পুরনিগম (MCD)। তার খেসারত তো কাউকে দিতেই হবে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলেও ব্যতিক্রমী কোনও ঘটনা ঘটলো না। রাজধানীর পুরনিগম ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দাঁত কামড়ে পড়ে থাকলেও ‘বলির পাঠা’ করা হল দলের রাজ্য সভাপতিকে। নির্বাচনে পরাজয়ের দায় নিয়ে পদ ছাড়তে কার্যত বাধ্য করা হলো আদেশ গুপ্তকে। রবিবার তিনি রাজ্য সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তাঁর জায়গায় আপাতত দল চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহ-সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেবাকে। কেন ফল বেরনোর চারদিন পর আদেশ গুপ্ত পদত্যাগ করলেন, গেরুয়া শিবিরের অন্দরে তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে হিমাচলে পরাজয় নিয়ে এখনও চুপ কেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব? সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের রাজ্য বলেই কি এখনই কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে সাত-পাঁচ ভাবছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব?
দিল্লির পুরনিগমের ভোটের ফল প্রকাশিত হয়েছে বুধবার। পনেরো বছর পর এবার ওই পুরবোর্ড পদ্ম শিবিরের হাতছাড়া হয়েছে। ২৫০ ওয়ার্ডের পুর নিগমে আম আদমি (Aam Admi Party) পেয়েছে ১৩৪টি ওয়ার্ড। ১০৪ ওয়ার্ড নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বিজেপিকে। আর কংগ্রেসের (Congress) অবস্থা তথৈবচ। যদিও এখনও মেয়র নির্বাচন বাকি। মেয়র বাছাইয়ের ভোটে কোনও দলীয় হুইপ থাকে না। তাই ঘোড়া কোনাবেচার ভয় পাচ্ছে আম আদমি পার্টি। কারণ কিছু ওয়ার্ডের প্রতিনিধিকে এদিক ওদিক করতে পারলেই মেয়রের চেয়ার দখল সম্ভব। চণ্ডীগড়ের পর বিজেপি (BJP) দিল্লিতেও নিজেদের লোককে মেয়র করতে ঝাঁপাবে কিনা এখনও স্পষ্ট নয়। গত বছর চণ্ডীগড় পুরনিগম আপ (AAP) দখল করে। কিন্তু কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে মেয়র পদ দখল করে বিজেপি।
দলীয় সূত্রের খবর, পদত্যাগের সিদ্ধান্ত আদেশ গুপ্তার ব্যক্তিগত নয়। তাঁকে সরে যেতে বলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda)। সেই কারণেই বুধবার ফল বেরোনোর পর চারদিন পর হারের দায় নিয়ে রাজ্য সভাপতির পদ ছাড়লেন আদেশ। হিমাচলপ্রদেশ বিধানসভাও বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে এবার। পাহাড়ি ওই রাজ্যের মানুষ জেপি নাড্ডা। তাছাড়া ভোটের প্রচার এবং প্রার্থী বাছাইয়ে তিনি সামনের সারিতে ছিলেন। প্রচারে নাড্ডা ও অনুরাগ ঠাকুর (Anurag Thakur) ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ১০ বার প্রচারে দেবভূমিতে যান।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, নাড্ডা কেন পদত্যাগ করবেন না? বিজেপির এক পদস্থ নেতা বলেন, বিজেপি সংগঠন অনুযায়ী চলে। জেপি নাড্ডা হিমাচল বিজেপির কোনও সাংগঠনিক পদে নেই। তিনি জাতীয় সভাপতি। পরাজয়ের দায় যদি কাউকে নিতে হয় সে হিমাচলের রাজ্য সভাপতি এবং রাজ্য কমিটিকে। ওই রাজ্যের ভোটের ফল নিয়ে পর্যালোচনা এখনও শেষ হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.