সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেজরি জমানার আবগারি নীতিতে সরকারের বিরাট আর্থিক লোকসানের ঘটনায় এবার তদন্তের ইঙ্গিত দিলেন দিল্লির বিধানসভার স্পিকার। স্পিকার বিজেন্দ্র গুপ্ত জানিয়ে দিলেন, ক্যাগের এই রিপোর্ট পাঠানো হবে পাবলিক অ্যাকাউন্ট কমিটিতে (PAC)। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে শুরু হবে তদন্ত। শুধু তাই নয়, আপ জমানার ‘কুকীর্তি’র ভাঁড় ভাঙতে আগামী ৩ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হল বিধানসভা অধিবেশনের মেয়াদ।
গত মঙ্গলবার দিল্লি বিধানসভায় আপের শাসনকালের ১৪টি বিষয়ের ক্যাগ রিপোর্ট বিধানসভায় জমা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত। সেখানেই দেখা যায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারের নয়া আবগারি কারণে রাজকোষের ২০০২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ২০১৭-১৮ থেকে ২০২০-২১ এই চার বছরে সরকারের ভুল নীতির কারণে ক্ষতি হয়েছে ২০০২ কোটি টাকা। রিপোর্ট অনুযায়ী, যে সব লাইসেন্স সারেন্ডার করা হয়েছিল সেগুলি পুনরায় চালু না করার কারণে সরকারের ক্ষতি হয় ৮৯০ কোটি টাকা। পাশাপাশি এই বিলম্বের কারণে সংশ্লিষ্ট মদের দোকানগুলি বন্ধ থাকার জেরে আরও ৯৪১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। শুধু তাই নয়, করোনা পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীদের করছাড় দেওয়ার কারণে আরও ১৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। জোনাল লাইসেন্স ধারকদের থেকে নির্দিষ্ট সিকিউরিটি ডিপোজিট না নেওয়ার কারণে ক্ষতি হয়েছে ২৭ কোটি টাকার।
এই ইস্যুতেই স্পিকার বিজেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে প্রাক্তন সরকারের কীর্তিকলাপের সিএজি রিপোর্ট পেশ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি এই অধিবেশনে যতটা সম্ভব রিপোর্ট পেশ করার। তাই অধিবেশনের মেয়াদ ৩ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।” এর পাশাপাশি আবগারি নীতি সংক্রান্ত ক্যাগ রিপোর্ট প্রসঙ্গে বলেন, “যে রিপোর্ট এসেছে তাতে স্পষ্ট যে প্রাক্তন সরকারের নীতির জেরে ২০০২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে সরকারের। এই রিপোর্ট খতিয়ে দেখতে শাসক ও বিরোধী দলের সদস্যদের নিয়ে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি) গঠন করা হবে। কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বিধানসভা।” স্পিকারের বার্তায় স্পষ্ট যে আবগারি ইস্যুতে কেজরিওয়ালদের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে মাঠে নামছে দিল্লির বিজেপি সরকার।
যদিও এই আর্থিক ক্ষতির জন্য বিজেপির দিকে আঙুল তুলে বিরোধী নেত্রী অতিশী জানিয়েছেন, “এই আর্থিক ক্ষতির দায় উপরাজ্যপাল, সিবিআই ও ইডির। এদের দখলদারির জন্যই আবগারি নীতি সঠিকভাবে লাগু করা যায়নি। যার জন্যই এই ক্ষতি। নীতি চালু করার আগেই এতে বাগড়া দেন উপরাজ্যপাল। ফলে একেবারে তৃণমূলস্তরে এটি লাগু করাই যায়নি। দ্বিতীয়ত নীতি লাগুর একবছরের মধ্যেই উপরাজ্যপালের নির্দেশ এফআইআর দায়ের করে সিবিআই। ইডি এই পলিসি শেষ হওয়ার একবছর আগেই ইসিআইআর করে। এই তিনজনের তৎপরতার জেরে আধিকারিকদের সাহস হয়নি এই নীতিতে নতুন করে সই করার। যার জেরেই এই ক্ষতি।” বিরোধী দলনেত্রীর দাবি, আবগারি নীতিতে সরকারের কোনও ভুল ছিল না। শুধুমাত্র এদের জন্যই এই ক্ষতি হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.