সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গরুর শেষকৃত্য। আর সেখানে হাজির শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা। রীতিমতো ব্যান্ড বাজিয়ে, শোভাযাত্রা করে তার শেষকৃত্য সারেন আলিগড়ে্র মামিন গ্রামের বাসিন্দারা। আর এই সবটাই করা হয় সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে। এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সরকার ১৫০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। ইতিমধ্যে ১০০জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তবে ‘গো-মাতা’র শেষকৃত্যে হাজির থাকার জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, তাতেও কুছ পরোয়া নেহি, বলছেন মামিন গ্রামের বাসিন্দারা।
করোনার দাপটে সন্ত্রস্ত গোটা দেশ। লকডাউন করেও তাণ্ডবে লাগাম পরানো যাচ্ছে না। কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব মানতে জোর দিচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু আমজনতার তাতে থোড়াই কেয়ার। কখনও বাজার করার ছুতোয় তো কখনও আবার মদের দোকানে লম্বা লাইন দিচ্ছেন তাঁরা। এবার গো-মাতার শেষকৃত্যে অংশ নিতে গিয়ে সামাজিক দূরত্বের বিধি ওড়াল আলিগড়ের মামিন গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের সেই ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মামিন গ্রামে একটি দোকানের সামনে একটি গরু আশ্রয় নিয়েছিল। তাকে পাড়ার লোকেরাই খেতে দিত। দিন কয়েক ধরেই গরুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। শেষপর্যন্ত বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়। এরপরই শোকে ভেঙে পড়ে গোটা পাড়া। রীতিমতো ব্যান্ডপার্টি ভাড়া করে শোভাযাত্রা করে গরুটির শেষকৃত্য করা হয়। তাতে অংশ নেয় কম করে ১৫০ জন বাসিন্দা। যাদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা। গোটা প্রক্রিয়ায় সামাজিক দূরত্বকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। যার দোকানের সামনে গরুটি থাকত সেই দোকানদার দিনেশ চন্দ্র শর্মা বলেন, “আমার দোকানের সামনেই গরুটি থাকত। গো মাতার মৃত্যুতে সবাই শোকর্ত হয়ে পড়েছিল। তারা শেষযাত্রায় অংশ নিতে চাইছিল। কীভাবে নিষেধ করতাম!” তিনি আরও জানান, গরুটি দীর্ঘদিন ধরে ওই গ্রামে থাকত। তাই তার শেষকৃত্য করা তাদের দায়িত্ব। সেই দায়িত্বই তারা পালন করেছে।
ইতিমধ্যে ১২৫ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি ও ২৫ জন নির্দিষ্ট অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারও করা হয়েছে অনেককে। তবে তা নিয়ে মোটেই ভাবিত নন গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের কথায়, “গো-মাতার শেষকৃত্য করায় যদি জেলে যেতে হয়, তো যাব। কী আর করা যাবে”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.