বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: খুব শীঘ্রই দলত্যাগ বিরোধী আইনে সংশোধনী আনতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দলবদলুদের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যেই এই সংক্রান্ত সংশোধনী আনা হতে পারে। কর্মসূচিতে না থাকলেও সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনেই এই সংক্রান্ত বিল আনা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সোমবার এই জল্পনা উসকে দিয়েছেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা (Om Birla)। দলবদলুদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। সোমবার সংসদে এক সাংবাদিক বৈঠকে বিড়লা দলত্যাগ বিরোধী আইন সংশোধনের প্রয়োজনীতার কথা উল্লেখ করার পরেই কেন্দ্র সরকার যে এবিষয়ে খুব শীঘ্রই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহালমহল।
এদিন দলবদলু সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে লোকসভার অধ্যক্ষ (Lok Sabha Speaker) ওম বিড়লা নিদিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলেই মন্তব্য করেছেন। সঙ্গে এবিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য তিনি নিজে কেন্দ্র সরকাররে অনুরোধ করবেন বলেও জানিয়েছেন। বিড়লা বলেছেন, “নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রক্রিয়া পালন হওয়া উচিত। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করব, যাতে তারা দলবদল সংক্রান্ত আইন (Anti defection law) সংশোধনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়।” বিড়লার এদিনের বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।
কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির (BJP) অন্দরে এবিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেই অধ্যক্ষ সর্বসমক্ষে বিষয়টিকে তুলে ধরেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এই সংক্রান্ত আইন সংশোধন করা হলে তা সারা দেশের জন্যই লাগু হবে সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে বর্তমানে এই বিষয়টিকে তুলে ধরার পিছনে বঙ্গ রাজনীতির প্রভাবই সকলের চোখে পড়েছে। বাংলায় বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়ের তৃণমূল কংগ্রেস যোগদান এবং বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে রাজ্য বিজেপি। বিষয়টিকে যে তারা সহজে ছেড়ে দেবে না সেই বার্তাও বিজেপির পরিষদীয় দল ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানাতে রাজ্যের বিজেপির বিধায়করা সদলবলে দিল্লি আসার তোড়জোড়ও করছেন বলেও শোনা গিয়েছে ।
পূর্ব ঘোষণামতোই ১৯ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। যা চলবে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত। ছুটি বাদ দিয়ে ১৯ দিন চলবে অধিবেশন। সংসদের দুই কক্ষেই সকাল ১১টা থেকে ৬টা পর্যন্ত চলবে অধিবেশন। ১৮ জুলাই সর্বদল বৈঠক ডেকেছেন লোকসভার অধ্যক্ষ। অধিবেশনে সাংসদ, সংসদের কর্মী এবং সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের কোভিড নিয়ম মানতে হবে। তবে এবার সংসদ চত্বরে প্রবেশের ক্ষেত্রে আরটি-পিসিআর (RT-PCR) পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। করোনা টিকার একটি ডোজ নেওয়া থাকলেই বিনা পরীক্ষায় প্রবেশাধিকার মিলবে। তবে, যাঁরা এখনও পর্যন্ত টিকার একটি ডোজও নেননি, তাদের জন্য আরটি—পিসিআর পরীক্ষা আবশ্যিক। লোকসভার ৪৪১ জন সাংসদের টিকাকরণের দু’টি ডোজই হয়ে গিয়েছে। বাকিদের টিকার প্রথম ডোজ হয়েছে মাত্র ২৩ জন এখনও পর্যন্ত করোনা টিকা নেননি। চিকিৎসাজনিত কারণ এবং করোনার লক্ষণের কারণে তাঁরা এখনও পর্যন্ত টিকা নেননি বলেই জানিয়েছেন বিড়লা। বাদল অধিবেশনে সংসদে করোনার পরীক্ষার পাশাপাশিই টিকাকরণের (Vaccination) ব্যবস্থা থাকবে। নতুন সংসদ ভবন তৈরি কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই হয়ে যাবে এবং সংসদের সমস্ত বিষয়কে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসার জন্য লোকসভা সচিবালয়ের পক্ষ থেকে একটি অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন বিড়লা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.