সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসানে চলা আইডিবিআই ব্যাংককে বাঁচাতে এবার এলআইসি-র শরণাপন্ন কেন্দ্র সরকার। চাঞ্চল্যকর সিদ্ধান্তে নানা মহলে কেন্দ্রের নীতি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। যে ব্যাংকের ঋণের ২৫ শতাংশই অনুৎপাদিত সম্পদ বা এনপিএ, তার বোঝা এলআইসি-র উপর দিলে আসলে সাধারণ বিমা গ্রাহকদের অর্থ সুরক্ষার স্বার্থে কতটা প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কেন্দ্র যদিও জানিয়েছে, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
দীর্ঘ সময় লোকসানে চলতে থাকা আইডিবিআই ব্যাংকের ৪০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করতে চায় কেন্দ্র সরকার। ওই ব্যাংকের ৪০ শতাংশ শেয়ার কেনার জন্য সরকারের অনুমোদন চেয়েছে এলআইসি। উল্লেখ্য, এর আগে কোল ইন্ডিয়ার বিলগ্নীকরণের সময়েও ওই সংস্থার বড় অংশের শেয়ার কিনেছিল এলআইসি। এবারও আইডিবিআইকে বাঁচাতে তাদের উপরই ভরসা রাখছে কেন্দ্র।
গত বছর ৪৪,৭৫৩ কোটি টাকা থেকে চলতি বছরের মার্চে ৫৫,৫৮৮ কোটিতে পৌঁছেছে আইডিবিআই ব্যাংকের ক্ষতির পরিমাণ। মোট ঋণের প্রায় ২৫ শতাংশের বেশি অনাদায়ী ঋণ হিসেবে ঘোষিত। এছাড়াও ব্যাংকের ৬০০ কোটির একটি ঋণ-দুর্নীতির তদন্ত করছে সিবিআই। লোকসানে চলা আইডিবিআই ব্যাংকের সংখ্যাগরিষ্ঠ ৮১ শতাংশের অংশীদারিত্ব রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। গত বাজেটেই তা কমিয়ে ৫০ শতাংশে আনার কথা জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। যদিও এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস।
কয়েকদিন ধরেই দেশের ব্যাংকিং সেক্টর কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলেছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, তার সবচেয়ে বড় কারণ এনপিএর ক্রমাগত বৃদ্ধি। রিপোর্ট বলছে, ব্যাংকগুলির অর্থাভাব মেটাতে কয়েক বছরের মধ্যে ১৯ লক্ষ কোটি টাকা দরকার। কেন্দ্র পর্যায়ক্রমে ব্যাংকগুলিকে টাকা দিচ্ছে। কিন্তু তাও যখন যথেষ্ট নয়, তখন বিলগ্নীকরণ। এর জন্য সরকারের লক্ষ্য রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা।
ব্যাংক সেক্টর নিয়ে নাকাল কেন্দ্র সরকারের ভাবনায় রয়েছে এফআরডিআই বিল। সেটি ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। কিন্তু বিরোধীদের আপত্তিতে রাজ্যসভায় পেশ করা যায়নি। আইডিবিআই ব্যাংকের শেয়ার এলআইসি-র হাতে নেওয়ার বিষয়টি যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ। বর্তমান আইনে সেটি সম্ভব নয়। এর জন্য সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.