সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাবা সাফাইকর্মী। মা মাতৃ সহায়ক কেন্দ্রের কর্মী। স্রেফ লড়াই করার মানসিকতা, পরিশ্রম ও অদম্য জেদকে আঁকড়ে ছেলেবেলার স্বপ্ন ছুঁয়ে ফেললেন সাফাইকর্মীর কন্যা চণ্ডীগড়ের প্রিয়া। স্বপ্নের চণ্ডীগড় মেডিক্যাল কলেজে (GMCH) ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেলেন তিনি। তাঁর এই স্বপ্নপূরণের কাহিনি যেন রূপকথাকেও হার মানায়। প্রিয়ার লড়াইয়ের কাহিনি এখন চণ্ডীগড়ের ছেলেমেয়েদের অনুপ্রেরণা। লক্ষ্যপূরণের রকেটের জ্বালানি।
প্রিয়ার বাবা হনুমান প্রসাদ সরকারি পলিক্লিনিকের সাফাইকর্মী। মা সরোজ কুমারী মাতৃ সহায়ক কেন্দ্রের সহায়িকা। নুন আনতে পান্তা ফুরনো পরিবার। কিন্তু ছেলেবেলা থেকেই লেখাপড়ায় ভাল প্রিয়া। চোখে একরাশ স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। লক্ষ্য ছিল চণ্ডীগড় মেডিক্যাল কলেজে ভরতি হওয়ার। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় সেই স্বপ্নই সফল করলেন প্রিয়া।
মেয়ের কৃতিত্বে গর্বিত বাবা হনুমান প্রসাদ জানাচ্ছেন, “ছোট থেকেই আমার সঙ্গে পলিক্লিনিকে যেত প্রিয়া। চিকিৎসকরা কীভাবে রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন, তা মন দিয়ে দেখত সে। অনুপ্রাণিত হত। ছোট থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখত। নিজের স্বপ্নপূরণের প্রথম ধাপ অর্জন করে ফেলেছে। আমরা গর্বিত।” মেয়েকে নিয়ে আপ্লুত সরোজ কুমারী বলছেন, “আমি দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। কিন্তু আমার মেয়ে আমাকে সবসময় নতুন নতুন জিনিস শেখাত, পড়াত। কলেজে ভরতি হওয়ার সমস্ত প্রক্রিয়া সে একাই সামলেছে।” ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে প্রিয়ার মেডিক্যাল ক্লাস।
আর এদিকে মুখে একরাশ হাসি নিয়ে প্রিয়া শোনাচ্ছেন তাঁর লড়াইয়ের গল্প। ছেলেবেলায় প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করে জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে ভরতি হয়েছিল সে। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়েছিল স্কলারশিপের টাকায়। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করার পর একবছর মনপ্রাণ দিয়ে ডাক্তারির প্রবেশিকা NEET-এর জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন প্রিয়া। প্রস্তুতির জন্য পুণের একটি প্রতিষ্ঠানে ভরতি হয়েছিলেন তিনি। সেখানে ভরতি হতেও অবশ্য পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। প্রিয়া জানাচ্ছেন, সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ক্লাস হত সেখানে। এরপর চলত নিজের পড়াশোনা। একবছরের কঠোর পরিশ্রমের ফল পেলেন তিনি। ভাগ্নির সাফল্যে গ্রামে ইতিমধ্যে ১৫ কেজি লাড্ডু বিলি করে ফেলেছেন প্রিয়ার মামা। আর এই লড়াইয়ের গল্প এখন চণ্ডীগড়ের বহু ছেলেমেয়ের অনুপ্রেরণা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.