সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মা দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির বাইরে।বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রচ্ছন্ন মদত দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে অজ্ঞাত স্থানে বন্দি রাখা হয়েছে। একমাসেরও বেশি সময় হয়ে গেল মায়ের মুখ দেখতে পারেননি মেয়ে। স্পর্শকাতর এলাকায় তাই মাকে দেখতে যেতে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি লিখেছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির মেয়ে। সেইমতো আজ তাঁকে কাশ্মীর গিয়ে মায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দিল শীর্ষ আদালত।
সানা ইলতিজা জাভেদ। মেহবুবা মুফতির মেয়ে। মাসখানেক আগে জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার হওয়ার আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এবং মেহবুবা মুফতিকে প্রথমে গৃহবন্দি, তারপর গ্রেপ্তার করে তাঁদের একটি জায়গায় নিয়ে গিয়ে রাখা হয়। উভয়েই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি সমব্যথী, এই অভিযোগ রয়েছে আবদুল্লা এবং মুফতির বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, সেখানে দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী একে অন্যের বিরুদ্ধে এতই বিষোদগার করছিলেন যে তাঁদের পৃথক জায়গায় রাখার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ প্রশাসন।
শ্রীনগরের কাছে চশমে সাহি এলাকায় চলে যান মেহবুবা মুফতি। কিন্তু তারপর থেকে মেয়ে বা পরিবারের অন্য কোনও সদস্যকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছিল না। মুফতির মেয়ে সানা চেন্নাইতে পড়াশোনা করেন। নিজের ঘরের এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন সানা বারবার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েও অনুমতি পাননি। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের জন্য উপত্যকায় অশান্তির আশঙ্কা করে বেশ কয়েকদিন জম্মু, শ্রীনগরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রেখেছিল কেন্দ্র। রাজ্যের বাইরে থাকা আত্মীয়-পরিজন, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সেসময় সানা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, কাশ্মীরবাসী নিজেদের খাঁচাবন্দি জীব বলে মনে করছে। তাঁদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
তাতে কোনও সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মুফতিকন্যা। তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমাকে কেউ শ্রীনগরের আশেপাশে ঢুকতে দিচ্ছেন না। কিন্তু আমি মায়ের সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করতে চাই, আমাকে তা করতে দেওয়া হচ্ছে না।’বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে স্পষ্ট বলেন, ‘একজন মেয়ে মায়ের পাশে
যেভাবে দাঁড়াতে চায়, আপনি কি সেভাবে দাঁড়াতে পারবেন? এটা প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার।’ এই পর্যবেক্ষণের পর তিনি নির্দেশ দেন, অবিলম্বে যেন সানাকে তাঁর মা মুফতির সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে এও বলা হয়, শ্রীনগরে তিনি যেন বাধাহীনভাবে ঘোরাফেরা করতে পারেন। এই রায় শুনে স্বভাবতই খুশি মুফতিকন্যা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.