সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার প্রভাব পড়েছে ধর্মীয় স্থানগুলিতেও। বহু মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়েছে গির্জাতেও প্রার্থনার জন্য আসছে না মানুষ। মসজিদের বদলে বাড়িতেই নামাজ না পড়ার কথা বলছেন মৌলবিরা। এই পরিস্থিতিতে কেদারনাথ ও বদ্রিনাথের মন্দির খোলার দিনও পিছিয়ে গেল। এই প্রথমবার নির্দিষ্ট দিনে খুলবে না দেশের অন্যতম বড় এই মন্দির। ২৯ এপ্রিলের বদলে কেদারনাথ খুলবে ১৪ মে। বদ্রিনাথ খুলবে ৩০ এপ্রিলের বদলে ১৫ মে।
করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে জারি রয়েছে লকডাউন। ৩ মে তা প্রত্যাহার করার কথা ঘোষিত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ২৯ বা ৩০ মে কেদারনাথ ও বদ্রিনাথ খোলা সম্ভব নয়। কিন্তু কবে এই মন্দিরগুলো খুলবে তা নিয়ে সংশয় ছিল। সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র রাওয়াত, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী সৎপাল মহারাজ এবং তেহরির সাংসদ মালা রাজ্যলক্ষ্মী শাহ বৈঠকে নতুন দিন দু’টি স্থির করেন। বৈঠকের পর মন্ত্রী সৎপাল মহারাজ বলেন, তেহরি রাজপরিবারকে বদ্রিনাথের ধর্মীয় প্রতিনিধি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তাই তেহরি রাজপরিবারের অনুমোদনের পরই দিন স্থির করা হয়। তিনি জানান, বৈঠকে কেদারনাথ মন্দিরগুলি ১৪ মে এবং বদ্রিনাথ মন্দির ১৫ মে খুলবে।
এমনিতে শীতের সময় মন্দির বন্ধ থাকার কারণে দুই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত রাজ্যের বাইরে থাকেন। এবার তাঁরা নিজের জায়গা থেকে উত্তরাখণ্ডের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। নান্দেদ (মহারাষ্ট্র) থেকে শুরু করেছিলেন কেদারনাথ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ভীমশঙ্কর লিং। ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রণ করে তিনি রবিবার উখিমঠে (কেদারনাথের শীতের অবস্থান) পৌঁছন। তারপরই তাঁকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে বদ্রিনাথের প্রধান পুরোহিত ঈশ্বরী প্রসাদ নাম্বুদ্রি কেরলের কন্নুর রওনা দিয়েছেন। মঙ্লবারের মধ্যে তাঁর উত্তরাখণ্ডেকর জোশিমঠ পৌঁছে যাওয়ার কথা। এর পর তাঁকেও কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে বলে খবর। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী রাজ্যের বাইরে থেকে যাঁরাই আসবেন, তাঁদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ড শেষ করতে হবে। পুরোহিতদের ক্ষেত্রেও এর কোনও ব্যতিক্রম হবে না।
মনে করা হয়, অষ্টাদশ শতকে কেদারনাথ এবং বদ্রীনাথ মন্দিরগুলি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আদি শঙ্করাচার্য। তাই প্রথা অনুসারে, কেদারনাথের প্রধান পুরোহিত কর্ণাটকের লিঙ্গায়েত সম্প্রদায় থেকে বেছে নেওয়া হয় এবং বদ্রিনাথের প্রধান পুরোহিত বেছে নেওয়া হয় কেরলের নাম্বুদ্রি ব্রাহ্মণ বংশ থেকে। কেদারনাথ, বদ্রিনাথ, গঙ্গোত্রি এবং যমনোত্রি এই চার ধর্মীয় স্থান বছরে ছ’মাস খোলা থাকে। গত বছর ৩.৩ লক্ষ মানুষ এই চার তীর্থ পরিদর্শনে এসেছিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.