সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যোগী আদিত্যনাথের সভায় প্রথমসারিতে বসে উল্লাস করতে দেখা গেল মহম্মদ আখলাখ খুনে মূল অভিযুক্ত বিশাল রানাকে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে গরুর মাংস রাখার অভিযোগে খুন করা হয়েছিল আখলাখকে। এই খুনের ঘটনায় অভিযুক্তরা বর্তমানে জামিনে বাইরে আছে। রবিবার তাদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত-সহ চারজনকে উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গেল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী জনসভার একদম সামনের সারির চেয়ারে বসে। গ্রেটার নয়ডার সেই বিসারা গ্রামে যেখানে ঘটেছিল আখলাখ খুনের ঘটনা। রবিবার সেখানে যোগীর সভামঞ্চের নিচে একদম সামনের চেয়ারে বসে উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গেল সেই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে।
[আরও পড়ুন- শত্রুর রাডার খুঁজতে ‘এমিস্যাট’ উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাল ভারত]
২০১৫ সালে গরুর মাংস ফ্রিজে লুকিয়ে রাখার অভিযোগে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে মারা হয়েছিল মহম্মদ আখলাখকে। বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে বেধড়ক মার খেতে হয়েছিল তাঁর ছেলে দানিশকেও। এমনকী এই ঘটনার একমাস পরে পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়ে গ্রাম ছাড়েন তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা। রবিবারের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেই ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন যোগী। বলেন, “বিসারা কী হয়েছিল তা মনে হয় না কেউ ভুলে গেছেন। সবাই বিষয়টি জানেন। সেইসময় সমাজবাদী পার্টির সরকার যেভাবে মানুষের অনুভূতি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক ছিল। কিন্তু, আমাদের সরকার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরেই গরু কাটার সমস্ত অবৈধ কারখানা বন্ধ করেছে।”
[আরও পড়ুন- জানেন, কার পরামর্শে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেস যোগ দিচ্ছেন শত্রুঘ্ন সিনহা?]
স্থানীয় বিজেপি প্রার্থী মহেশ শর্মার সমর্থনে আয়োজিত এই নির্বাচনী জনসভা থেকে অতীতে ক্ষমতায় থাকা সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির সরকারের প্রবল সমালোচনা করেন উত্তরপ্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী। ওই দুই দলের সরকার জাতপাতের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। বলেন, “দুটি দলই হাস্যকর রাজনীতি করে একদিকে নিজেদের পরিবারের উন্নতি করেছে, অন্যদিকে দেশের সামাজিক পরিকাঠামো ধ্বংস করেছে। কিন্তু, ২০১৪ সালের মে মাসে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ব্যক্তিগত স্বার্থ, পরিবার, জাতপাত বা ধর্মের ভিত্তিতে কোনও কাজ করেনি সরকার। বরং গ্রাম, গরীব মানুষ, যুবপ্রজন্ম, মহিলা ও কৃষক-সহ সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষের জন্য কাজ করেছে। আগে যখন কংগ্রেস সরকারে ছিল, তখন তাদের প্রধান বলেছিলেন, দেশের সম্পদের উপর প্রথম অধিকার আছে নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের। এভাবেই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে বঞ্চিত করেছিল তারা। একই পথে হেঁটেছিল সমাজবাদী ও বহুজন সমাজ পার্টির সরকার। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী মোদি সমস্ত মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তার সুফল আজ আপনারা দেখতেও পাচ্ছেন।”
[আরও পড়ুন- দু’ণ্টায় অন্তত ন’বার কেঁপে উঠল আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ]
অতীতে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তি হলে রাজ্য প্রশাসন শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের মানুষদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করত বলেও রবিবার অভিযোগ করেন যোগী। তখন হিন্দুদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করার ফলেই পরবর্তীকালে অশান্তি তৈরির পটভূমি তৈরি হয় বলেও দাবি তাঁর। তবে, তিনি ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটেছে বলে জানান আদিত্যনাথ।
[আরও পড়ুন- ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই ময়দানের শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব]
জনসভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, “আমার দুবছরে রাজ্যকে কি বিসারার মতো কোনও ঘটনা ঘটেছে? মা এবং বোনেদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও সমস্যা হয়েছে?” এরপর নিজেই বলেন, “না, এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। কারণ আমরা কথা দিয়েছিলাম এই রাজ্যের ২৩ কোটি মানুষের উন্নয়ন করব। সবাইকে নিরাপত্তা দেব, সমাজের মূলস্রোতে নিয়ে আসব। আমরা যেমন মানুষের মধ্যে বিভাজন করব না তেমনি নির্দিষ্ট একটা অংশের মানুষকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার মতো হাস্যকর রাজনীতিও করব না।”
#WATCH: One of the accused in September 2015 Mohd Akhlaq lynching case, Vishal Singh (bearded man in white shirt), was seen in a BJP rally in Bisada village yesterday. The rally was addressed by CM Yogi Adityanath. (31.03.2019) pic.twitter.com/QViy7LoUWV
— ANI UP (@ANINewsUP) April 1, 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.