সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফণীর তাণ্ডবে বিপর্যস্ত গোটা ওড়িশা। অন্তত এগারোটি জেলার মানুষের জীবনযাত্রা আমূল বদলে দিয়েছে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়৷ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলেই ক্ষয়ক্ষতির ছাপ স্পষ্ট। প্রাণহানি হয়েছে অনেকের৷ কোথাও ভেঙেছে কাঁচাবাড়ি৷ তো কোথাও উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি৷ গাছও ভেঙে গিয়েছে অসংখ্য৷ ফণীর ফণায় বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরও৷ যদিও পুরোহিতদের দাবি ফণী স্পর্শ করতে পারেনি মন্দিরকে৷ সাধারণ মানুষ এবং ওড়িশার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ফণীতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷ তাৎপর্যপূর্ণ বদল ঘটেছে চিলকা হ্রদ। ওড়িশায় ফণীর তাণ্ডব দেখানোর পরই খুলে গিয়েছে এই হ্রদের আরও চারটি মুখ।
পূর্বাভাস ছিল৷ সেই অনুযায়ী মোকাবিলার উপযুক্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল৷ তবে তা সত্ত্বেও এড়ানো যায়নি প্রাণহানি৷ ফণীর তাণ্ডবে ওড়িশায় প্রাণ গিয়েছে তিরিশেরও বেশি মানুষের৷ বিধ্বস্ত অন্তত এগারোটি জেলা৷ উপকূলবর্তী জেলার বেশিরভাগ এলাকাই এখনও বিদ্যুৎহীন৷ পানীয় জলেরও সমস্যায় রয়েছেন অনেকেই৷ টানা আটদিন ধরে বিদ্যুৎ এবং জলের পরিষেবা না পেয়ে ইতিমধ্যেই বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন স্থানীয়রা৷ পুরীর মন্দিরও যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেই দাবি অনেকের৷ যদিও সেই দাবি মানতে নারাজ পুরোহিতরা৷ ফণীর ফণায় যখন চতুর্দিক বিধ্বস্ত তখন সুখবর রয়েছে চিলকা হ্রদ এলাকায়৷ ফণীই যেন হ্রদের ক্ষেত্রে আশীর্বাদ৷ চিলকা উন্নয়ন পরিষদের চিফ এক্সিকিউটিভ সুশান্ত নন্দ জানান, ওড়িশায় ফণী তাণ্ডব দেখানোর পর খুলে গিয়েছে চিলকা হ্রদের আরও চারটি মুখ৷ সানপাটনা এবং আকাখাকুডার মাঝামাঝি এলাকা থেকে হ্রদের দুটি মুখ এবং অপর একটি মুখ দেখা গিয়েছে চিলকার উত্তরাংশ থেকে৷
এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই লবণাক্ত হ্রদের যে চারটি দ্বার খুলে গিয়েছে সেগুলির সবই বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে যুক্ত। লবণ বাড়ার কারণে চিলকা হ্রদের এমন প্রভাব মাপজোক করে দেখছেন চিলকা উন্নয়ন পরিষদের কর্মকর্তারা। এই ফণী ঝড়ের আগে বঙ্গোপসাগরের দিকে মাত্র দুটি মুখ খোলা ছিল চিলকার। চিলকা উন্নয়ন পরিষদের চিফ এক্সিকিউটিভ সুশান্ত নন্দ আরও বলেন, ‘‘চিলকা হ্রদে মূলত মিষ্টি এবং নোনা জলের সংমিশ্রণ৷ নতুন ওই চারটি মুখ দিয়ে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণ সমুদ্রের জল চিলকা হ্রদে ঢুকছে৷ লবণের পরিমাণ ঠিক কতটা তা আমরা পরীক্ষা করে দেখছি৷ লবণের পরিমাণ যত বাড়বে, ততই মঙ্গল৷ কারণ, তাতে বাড়বে মাছের সংখ্যা৷ তবে নতুন এই চারটি মুখ ভবিষ্যতের জন্য আদতে কতটা উপযোগী, তা জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে৷’’ তার পাশাপাশি এই নতুন চারটি মুখের আবির্ভাবে পরিযায়ী পাখির সংখ্যাও বাড়তে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা৷ হয়ত ভবিষ্যতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নয়া রাস্তা খুলে দিল এই সদ্য আবিষ্কৃত চতুর্মুখ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.