সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের নতুন করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হল রবিবার সকালে। শহরের একাধিক প্রান্তে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভকারীরা। শহরে জারি হয়েছে কারফিউ। লাগু করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। একসঙ্গে চারজন করে ব্যক্তি রাস্তায় জড়ো হতে নিষেধ করেছে প্রশাসন।
গত বৃহস্পতিবার সরাইকেল্লা-খুশওয়াহান জেলায় স্থানীয়দের গণপিটুনিতে চার মুসলিম ব্যক্তির মৃত্যুর পর থেকেই অশান্ত ঝাড়খণ্ড। এই নিয়ে একইদিনে দ্বিতীয়বার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঝাড়খণ্ড। বৃহস্পতিবারই একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ভাইরাল হয়ে ওঠে দক্ষিণ ঝাড়খণ্ডে। ওই মেসেজে লেখা ছিল, একদল ছেলেধরা শহরের শিশুদের চুরি করে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করছে। ছেলেধরা সন্দেহে সরাইকেল্লা-খুশওয়াহান জেলার শোভাপুর গ্রামে মহম্মদ নঈম নামে এক পশু ব্যবসায়ী ও তাঁর তিন বন্ধুকে গণপিটুনি দেয় উন্মত্ত জনতা। পাশের রাজনগর গ্রামের বাসিন্দারা হারানো শিশুদের খোঁজে সেখানে এসে ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করে নঈম ও তাঁর তিন বন্ধু সাজু, সিরাজ ও আলিমকে।
এখানেই শেষ নয়, একইভাবে পূর্ব সিংভূম জেলার নগরী গ্রামেও উন্মত্ত জনতা তিন ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিলে তাঁদের মৃত্যু হয়। মৃত গৌতম ভার্মা ও তাঁর ভাই বিকাশ ভার্মাকে ছেলেচোর সন্দেহে গণপিটুনি দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই শুক্রবার মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী বেশ কিছু এলাকায় রাস্তা কেটে, পথের উপর গাছের ডালপালা ফেলে ও দোকান বন্ধ রেখে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। জনতার ছোড়া ইটের আঘাতে কয়েকজন পুলিশকর্মী আহতও হন বলে প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রভাত খবর’-এ। ছেলেধরা সন্দেহে ঝাড়খণ্ডে মোট ৯ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস নাও।
রবিবার পাল্টা অভিযান চালায় পুলিশও। জামশেদপুরের ম্যাঙ্গো এলাকায় বিক্ষোভকারী জনতা ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে গুলি চালায় পুলিশ। খবরটি জানিয়েছে পিটিআই। পূর্ব সিংভূম জেলার ডেপুটি কমিশনার অমিত কুমার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় সেনা নামানো হয়েছে। রাস্তার মোড়ে টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর নীরবতার সমালোচনা করেছে রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.