সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশার বাণী শোনালেন সিএসআইআর (CSIR) এর বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় তাঁদের কাছে উঠে এসেছে নয়া তথ্য। ভারতে করোনা সংক্রমণ ছড়ানো ভাইরাসের জিন নাকি দুর্বল! ফলে এর শক্তিও কম। দ্রুতই নাকি বাগে আনা যাবে এই মারণ ভাইরাসকে।
দেশের সবথেকে বেশি সংক্রমিত রাজ্যগুলি থেকে করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করেন সিএসআইআর বিজ্ঞানীরা। মহারাষ্ট্র, তেলঙ্গানা, দিল্লি, তামিলনাড়ুতে সংক্রমিকতদের শরীর থেকে নমুনা নিয়ে ভাইরাসের স্ট্রেন দেখেই চমকে উঠেছেন তাঁরা। সেই নমুনা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাসের জিনের গঠন বিন্যাস বিশ্লেষণ করেন। এতে তাঁদের নজরে পড়ে যে ভারতে সংক্রমণকারী মারণ ভাইরাসের গঠন অত্যন্ত দুর্বল। এই ভাইরাস খুব বেশি নিজের জিনের পরিবর্তন ঘটায়নি। ফলে তার শক্তি বিশ্বের অন্য প্রান্তের মারণ ভাইরাসের থেকে তুলনামূলকভাবে কম। ফলে সংক্রমণ ছড়াবার ক্ষমতাও সীমিত। সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি-র (CCMB) গবেষণাগারে এই ভাইরাসের জিনের গঠন-বিন্যাস নিয়ে তারা বিশ্লেষণ করেন। সেখানেই জিনোম সিকোয়েন্স (genome sequences) নিয়ে কাজ চালাচ্ছেন তারা।
বার বারই বিজ্ঞানীদের বলতে শোনা গেছে যে, রোগীর শরীরে প্রবেশের পরেই করোনা ভাইরাস নিজের জিনের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। ফলে হাতের মুঠো শক্ত করেও বিজ্ঞানীদের কাছে তা ফস্কা গেরো হচ্ছে। পার পেয়ে চলেছে মারণ ভাইরাস। দেখা গেছে, এক রোগীর শরীরে যে ভাইরাল স্ট্রেন রয়েছে, তা অন্যের থেকে আলাদা। নিজেকে টিকিয়ে রাখতে, এক মানুষের শরীর থেকে অন্য মানুষের শরীরে সংক্রামিত হওয়ার আগেই জিনের গঠন, বিন্যাস বদলে ফেলছে ভাইরাস। বেঁচে থাকার সময়কাল বাড়াতে ক্রমাগত এই পরিবর্ত করছে কোভিড-১৯ (COVID-19)
গবেষকদের কথায়, “জিনের গঠন-বিন্যাস কতটা বদলাচ্ছে, কী কী পরিবর্তন হচ্ছে সেটা দেখতে গিয়েই বিশেষ একরকমের ক্লাস্টার সিকুয়েন্স খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। ৬৪টি ভাইরাল স্ট্রেনের পূর্ণাঙ্গ গঠন বিন্যাস সাজিয়ে এমন ক্লাস্টার পাওয়া গেছে।” বিজ্ঞানীরা আরও বলেন, “এই ফাইলোজেনেটিক ক্লাস্টারের নাম Clade I / A3i। ” ভারতীয়দের থেকে নেওয়া ৪১শতাংশ ভাইরাল স্ট্রেনের জিনোম সিকুয়েন্সে এই ক্লাস্টার পাওয়া গেছে।
সিসিএমবি-র গবেষকরা জানান, “কোনও রোগকে প্রতিরোধের জন্য সবসময় সেই ভাইরাসের জিনের গঠন-বিন্যাস দেখা প্রয়োজন। খুঁজে বের করতে হয় ভাইরাসের দুর্বল অংশ। সেই লক্ষ্যেই গবেষণাগারে বার বার পরীক্ষা করা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে গঠন ও পরিবর্তন। এরপরে জিনের দুর্বল অংশকে লক্ষ্য করে ভ্যাকসিনকে টার্গেট করা হবে।” তাই এখন শুধু সময় আর সুযোগের অপেক্ষা। তারপরেই হতে পারে কেল্লা ফতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.