সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এজলাসে যাওয়ার উপর রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। আর সেকারণে নিউটাউনে রোসডেল টাওয়ারে নিজের বাড়িতেই বিশেষ আদালত বসিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনান। আর সেখানে বসেই শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সহ ৭ বিচারপতির উড়ানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন বিচারপতি কারনান। এয়ার কন্ট্রোল অথরিটির উদ্দেশে একটি নির্দেশিকা জারি করে একথা জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর-সহ বিচারপতি দীপক মিশ্র, জে চেলামেশ্বর, রঞ্জন গগৈ, মদন বি লকুড়, পিনাকীচন্দ্র ঘোষ এবং কুরিয়েন জোসেফ বিরুদ্ধে তপশিলী জাতি ও উপজাতি আইনের বেশ কিছু ধারায় মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেন কারনান। এরপরেই ওই ৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় মামলা। সেটির শুনানিতেই কারনান সুপ্রিম কোর্টের সাতজন বিচারপতিকে নিজের বাড়িতে বসানো বিশেষ আদালতে ২৮ এপ্রিল হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রত্যেকে সেই নির্দেশ অমান্য করায় এদিন কারনান তাঁদের উড়ানে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদ্যস্যের এই বেঞ্চই বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন৷ দেশের প্রায় ২০ জন বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন কারনান৷ এমনকী বিচারব্যবস্থা ও সরকারের কাজের সমালোচনা করে মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আপত্তিকর ও আক্রমণাত্মক ভাষায় চিঠি লিখেছিলেন বিচারপতি কারনান৷ সেই চিঠি তিনি প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে পাঠিয়েছিলেন৷ এরপরই সর্বসম্মতিতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা শুরু করেছিল শীর্ষ আদালত৷ এই মামলার শুনানিতে একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে বিচারপতি কারনানকে আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল৷ কিন্তু তিনি হননি। আর এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।
গত ৩১ মার্চ সেই মামলার শুনানি হয়েছিল। সেখানে শীর্ষ আদালত জানায়, একটি চিঠির মাধ্যমে ২৭ মার্চ কারনান ২০ জন বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকার অভিযোগ তিনি তুলে নিচ্ছেন। পাশাপাশি নিঃশর্ত ক্ষমাও চাইছেন। এরপরেই সুপ্রিম কোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় এবং পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে ১ মে। যদিও হাজিরা দেওয়ার আগে কারনান জানিয়েছিলেন, এজলাসে যাওয়ার অধিকার থেকে শুরু বিচারবিভাগীয় কাজে অংশ নিতে না দেওয়া অবধি ক্ষমা চাইবেন না তিনি।
এদিকে, এই সাত বিচারপতির বিরুদ্ধে মামলা শুরু করেন কারনান। এদিন জারি করা নির্দেশিকায় তিনি বিচারপতিদের হাজির না থাকার উল্লেখ করেন এবং আগামী ১ মে তাঁদের হাজিরার নির্দেশও দেন। অর্থাৎ ঠিক যেদিন শীর্ষ আদালতে কারনানের হাজিরা দেওয়ার কথা। এখন দেখার শেষপর্যন্ত এই যুদ্ধে শেষ হাসি হাসেন কে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.