সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বাসে মিলায় বস্তু.. তর্কে বহুদূর। মনে বিশ্বাস থাকলে হিংস্র পশুর মধ্যেও সন্ধান পাওয়া যায় ঈশ্বরের। অন্তত গুজরাটের মহিশগড়ের গ্রামবাসীরা তেমনটাই মনে করেন। নাহলে কি কেউ মায়ের বাহন ভেবে জ্যান্ত একটা কুমিরকে ধূপধুনো দিয়ে পুজো করে! অবিশ্বাস্য হলেও এমনটাই হয়েছে গুজরাটের ওই গ্রামে।
কুমির দেখলে ভয় পান না এমন লোক কমই আছেন। আর এই সরীসৃপটিকে ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণও আছে। ধারালো নখ, শক্তিশালী দাঁত এবং সেই সঙ্গে আছে গায়ে ধারালো কাঁটা। শিশুদের তো বটেই প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও বেশ ভয়ের বস্তু এই কুমির। কিন্তু, প্রাণীটি যতই ভয়ংকর হোক, এসেছে যখন মন্দিরে নিশ্চই কোনও দেবতারই রূপ হবে। স্রেফ এই ভাবনা থেকেই কুমিরটিকে রীতিমতো সিঁদুর লাগিয়ে, মন্ত্র পড়ে পুজো করে ফেললেন স্থানীয়রা। আর এই পুজোর চক্করে মন্দির চত্বরে কুমিরটি আটকে রইল প্রায় ঘণ্টা চারেক।
আসলে যে মন্দিরে কুমিরটি ঢুকে পড়েছিল, সেই মন্দিরটি খেদিয়ার মায়ের। পূরাণমতে এই দেবীর বাহন আবার কুমির। গত রবিবার মন্দিরে পুজো করতে গিয়ে পুরোহিত দেখেন মায়ের মূর্তির পিছনেই একটি কুমির আশ্রয় নিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মনে হয়, হয়তো সাক্ষাৎ মায়ের বাহনই তাদের কাছে পুজো নিতে এসেছে। যেমনি ভাবা তেমনি পুজো শুরু। খবর পেয়ে জড়ো হয়ে যায় গ্রামবাসীও। এত মানুষ একসঙ্গে দেখে বেচারা কুমিরও হয়তো ভয় পেয়েছিল। তাই নিজের হিংস্রতা হয়তো কিছুক্ষণের জন্য ভুলে গিয়েছিল। চার ঘণ্টা মন্দিরে আটক থাকার পর বনদপ্তরের কর্মীদের চেষ্টায় কুমিরটিকে উদ্ধার করা যায়।
বনদপ্তরের অধিকর্তা বলছেন, “আমি তো রীতিমতো অবাক। একটা ৬ ফুট লম্বা কুমির, যে কিনা আস্ত একটা হিপোপটেমাসকে গিলে খেয়ে নিতে পারে। তাঁকে কেউ ভয় পেল না। এমনকী আমাদের কুমিরটিকে উদ্ধার করতেও বাধা দিচ্ছিল ওরা। অনেক বুঝিয়ে-শুনিয়ে তবে রাজি করানো গিয়েছে।” ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, এই এলাকার নদীগুলিতে অনেক কুমির পাওয়া যায়। এরা সাধারণত খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এই কুমিরটিও সম্ভবত আগের দিন রাতেই মন্দিরে ঢুকে পড়েছিল কুমিরটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.