বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, কান্নুর: রামনবমীতেই রামচন্দ্রের আবির্ভাব! রামচন্দ্র ডোম (Ram Chandra Dome)। বীরভূমের দলিত সিপিএম (CPM) নেতা, প্রাক্তন সাংসদ। এই প্রথম সিপিএমের পলিটব্যুরোয় জায়গা করে নিলেন কোনও দলিত নেতা। সেই অর্থে দলের ২৩ তম পার্টি কংগ্রেস নতুন এক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইল। রামচন্দ্র ডোম নিজেও তাঁর এই সাফল্যকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। বয়সের কারণে পলিটব্যুরো থেকে এবার বাদ পড়েছেন বিমান বসু। তাঁর জায়গাতেই এসেছেন রামচন্দ্র ডোম।
বীরভূমের (Birbhum) রাজনীতিতে রামচন্দ্র ডোম বহু পরিচিত নাম। দীর্ঘদিন ধরে কার্যত মাটি কামড়ে সংগঠন করেছেন। ১৯৯১ সালে প্রথমবার বীরভূমের সাংসদ হিসেবে দিল্লির অন্দরে পা রাখেন। পরপর ৬ বার সাংসদ পদে নির্বাচিত হন। পরে ২০০৯ সালে আসন পুনর্বিন্যাসের জেরে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়ে ফের সাংসদ হন। ২০১৪ সালে হেরে যান রামচন্দ্র ডোম। রাজ্য সংগঠনের নানা স্তরে দায়িত্ব সামলেছেন দীর্ঘদিন। এবার সংগঠনের সর্বোচ্চ স্তরে অন্তর্ভুক্তি হল সমাজের তথাকথিত নিচু স্তরের নেতার।
সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী, সিপিএমে পলিটব্যুরো সর্বোচ্চ স্তর, তারপরই কেন্দ্রীয় কমিটি। এই দুই জায়গা থেকেই অবসর নিয়েছেন বিমান বসু। পলিটব্যুরো সদস্য হিসেবে বিমান বসুর জায়গায় এসেছেন রামচন্দ্র ডোম। এতদিন সিপিএমের এই শীর্ষ স্তরে কখনও কোনও দলিত (Dalit) নেতা বা নেত্রীর ঠাঁই হয়নি। সেই দরজা খুলে দিলেন রামচন্দ্র ডোম। নিজের কাজ, দক্ষতার জোরে তিনি ছিনিয়ে নিলেন সংগঠনের সর্বোচ্চ স্তরের আসন। আর তা হল রামনবমীর দিনেই। তাই রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, রামনবমীতে সিপিএমে রামচন্দ্রের আবির্ভাব। যদিও সিপিএমের দাবি, ঘটনাটা নিতান্তই কাকতালীয়।
সম্প্রতি দেশে দলিত ভোট টানাটানির অঙ্ক বেশ জটিল। উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের পর স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, দলিত ভোট এই মুহূর্তে বিজেপির (BJP) ঝুলিতেই। এদিকে, সংঘ বিরোধিতা সিপিএমের ঘোষিত এজেন্ডা। কেরলের পার্টি কংগ্রেসেও বাংলার তরুণ বামনেতারা বারবার সংঘের উস্কানিতে ধর্মীয় মেরুকরণের উসকানির অভিযোগ তুলেছেন। এই অবস্থায় সিপিএমের শীর্ষস্তরে একজন দলিত নেতার অন্তর্ভুক্তি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও সময়োপযোগী বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.