স্টাফ রিপোর্টার: তিন রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসায় স্বস্তিতে সিপিএম। সিপিএম স্বস্তিতে থাকার নেপথ্যে যুক্তি, এবার অন্তত সংগঠনটা করা যাবে। কারণ বিজেপির তুলনায় কংগ্রেস কিছুটা হলেও ‘গণতান্ত্রিক’। তাই সীতারাম ইয়েচুরি বা বঙ্গ ব্রিগেডের সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুর মতো জোটপন্থীরা এখন তিন রাজ্যে কংগ্রেসের জয়কে বড় করে দেখাতে চাইছেন। তাঁদের অভিমত, লোকসভা ভোটে
তিন রাজ্যের জয় বড় রকমের প্রভাব ফেলবে। কংগ্রেস ফের জাতীয় রাজনীতিতে ভূমিকা নিতে পারবে। তেলেঙ্গানায় দল দু’টি আসন পাওয়ায় খুশি ফরওয়ার্ড ব্লকও।
এখন দেখা যাক, বাম বিশেষ করে সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কংগ্রেসের সাফল্যের জন্য কোন বিষয়গুলিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের পথ মসৃন করতে পার্টি কংগ্রেসে রাজনৈতিক লাইন বদল করেছে সিপিএম। সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অভিমত, দেশে এখন শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপক মন্দা। জিএসটি বা বিমুদ্রাকরণের ফলে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা সংকটে রয়েছেন। তাই মহারাষ্ট্রের নাসিক-সহ ছত্তিশগড় বা মধ্যপ্রদেশে কৃষকদের মহামিছিলই এই জয়ের ক্ষেত্রে ভূমিকা নিয়েছে। চার মাসে পর লোকসভা ভোটে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ নয় ‘গ্রাম ভারত’ ও ‘কৃষি সংকট’ ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তাই সিটুর বদলে কৃষক ও খেতমজুরদের ‘লং মার্চ’-এর মতো কর্মসূচিকে আরও বেশি করে প্রসারিত করা হবে।
সিপিএমের পলিটব্যুরো ইতিমধ্যেই বিবৃতি দিয়ে বলেছে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও এবং ছত্তিশগড়ে বিজেপির হার স্পষ্ট করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি মধ্যবিত্ত মানুষের বিরুদ্ধে গিয়েছে। একধাপ এগিয়ে পলিটব্যুরো সদস্য ও কৃষকসভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লার কথায়, “তিন রাজ্যে বিজেপির হারের অন্যতম বড় কারণ কৃষক ও খেত মজুরদের বিজেপি বিরোধিতা। তাঁর দাবি লোকসভা ভোটে কৃষক সংগঠনকে সংহত করতে পারলে বিজেপি বিরোধী ভোট বাকি রাজ্যগুলিতেও বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে। এর বাইরে বাকি কারণের মধ্যে রয়েছে দলিত ও সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা।”
সিপিএমের মতোই শরিক সিপিআই ও খেতমজুর এবং কৃষক অসন্তোষকেই তিন রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবির অন্যতম কারণ বলে মনে করে। দলের সাধারণ সম্পাদক এস সুধাকর রেড্ডি জানিয়েছেন, “তিন রাজ্যের কৃষকরা মুখ ফিরিয়েছে তাই বিজেপির এমন ফল।” তাঁর আশা লোকসভা ভোটে এই ঘটনারই পুনারাবৃত্তি হবে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, তিন রাজ্যে ভোটারদের
২৯ শতাংশই নতুন। গত সাড়ে চার বছরে দেশে বড় শিল্প না হওয়ায় কর্মসংস্থানও হয়নি। আবার সারে ভরতুকি তুলে দেওয়ার মতো ঘটনা বিজেপির ভোট ব্যাংকে ধস নামিয়েছে। সিপিঅআইএম এল (লিবারেশন) নেতা পার্থ ঘোষের দাবি এই ভোটকে সংহত করতে পারলে লোকসভা নির্বাচনে এই ঘটনা বড় আকার নেবে। বামেদের মতোই রেশন ডিলার সংগঠনও তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোটের
ফলে খুশি। সংগঠনের নেতা প্রহ্লাদ মোদি বলেছেন, “সাড়ে চার বছরে গণবণ্টন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাই তিন রাজ্যের মানুষ বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.