বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদি সরকারকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বা ‘নব্য ফ্যাসিস্ট’ কেন বলা যাবে না? তা নিয়ে সিপিএমের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিল বাম পথের আরেক পথিক সিপিআইএমএল-লিবারেশন। শনিবার প্রশ্ন তুলেছেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তিনি জানান, সিপিএমের এহেন অবস্থানে বামেদের আদর্শ ও সংসদীয় রাজনীতির উপর আঘাত আসতে পারে। সম্প্রতি সিপিএম ২৪তম পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে প্রকাশিত খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাবে বিজেপি বা মোদি সরকারকে এখনই ফ্যাসিস্ট বা নব্য ফ্যাসিবাদী বলা যাবে না উল্লেখ করে। সিপিএমের এই অবস্থানে ক্ষুব্ধ হয় বাম শরিকরা।
আগেই মোদি সরকার ও বিজেপিকে ‘আধা ফ্যাসিস্ট’ বলে চিহ্নিত করেছিল সিপিএম। কিন্তু ‘ফ্যাসিস্ট’ বা ‘নব্য ফ্যাসিবাদী’ বলা হবে কি না, তা নিয়ে পার্টির অন্দরে বেশ কয়েক বছর ধরেই বিতর্ক চলছিল। পার্টির একাংশ মনে করে, মোদি সরকার বা বিজেপি সংঘ পরিবারের মদতে যেভাবে চলছে তা ফ্যাসিবাদের নামান্তর। নব্য ফ্যাসিবাদী বলা যেতেই পারে। সেই বিতর্ক উসকে দিয়ে সিপিএমের খসড়া রাজনৈতিক প্রস্তাবে বলা হয়, মোদি সরকার বা বিজেপিকে এখনই ফ্যাসিস্ট বা নব্য ফ্যাসিবাদী বলার সময় আসেনি। যদিও আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে তামিলনাড়ুর মাদুরাইতে খসড়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পর সিপিএম তাদের অবস্থান চূড়ান্ত করবে। তবে তার আগেই বামেদের অন্দরে সিপিএমের এই অবস্থান নিয়ে বিতর্ক প্রকাশ্যে চলে এল। প্রশ্ন তুলল বাম শরিক দল সিপিআইএমএল লিবারেশন।
নকশালপন্থী দলের শীর্ষ নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্যর মতে, বিজেপি ও মোদি সরকার যেভাবে জোর করে হিন্দুত্ব চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে ও বিরোধীদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে তা যে কোনও নব্য ফ্যাসিস্ট সরকার করে থাকে। কিন্তু সিপিএমের অবস্থান বামপন্থীদের বিভ্রান্ত করবে। সিপিএমের এই অবস্থান সংকীর্ণ মানসিকতাকে প্রশ্রয় দেবে বলে মনে করেন তিনি। দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বাবরি ধ্বংসের কথা স্মরণ করিয়ে জানান, সেদিন যেভাবে একটি ধর্মীয় স্থানের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছিল তাকে আন্তর্জাতিকভাবে ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় শুধু হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠন নয়। জড়িত ছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।
তাহলে কেন এখনও মোদি সরকার বা বিজেপিকে ফ্যাসিবাদী বলা যাবে না, প্রশ্ন সিপিআইএমএল লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদকের। তিনি আরও জানান, কেন বিজেপি ও মোদি সরকারকে ফ্যাসিবাদী বলা হবে তা বিশদে বলে গিয়েছেন সিপিএমের প্রয়াত প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তাই সিপিএম পার্টির অন্দরে ফের এই বিতর্ক উসকে দিয়ে কী প্রমাণ করতে চাইছে, তা জানতে চান দীপঙ্করবাবু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.