Advertisement
Advertisement

Breaking News

CPIM Party Congress

‘বেঙ্গল লাইন’ খারিজ কারাটদের, বিজেপি ও আরএসএসকে ‘প্রধান শত্রু’ হিসাবে চিহ্নিত করল শরিকরাও

কেন্দ্রের নকশাল দমন অভিযানকে 'রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস' বলছে লিবারেশন।

CPIM Party Congress: Party rejects Bengal line, Identifies BJP as enemy number one
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:April 2, 2025 9:41 pm
  • Updated:April 2, 2025 9:41 pm  

বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, মাদুরাই: পার্টি কংগ্রেসের প্রথম দিনেই ‘বেঙ্গল লাইন’ খারিজ করলেন সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বের পাশাপাশি শরিক নেতারা। বাংলায় পথভ্রষ্ট সিপিএম। দেশজুড়ে প্রধান শত্রু হিসাবে সংঘ পরিবার ও বিজেপিকে চিহ্নিত করে চরম সংগ্রামের রাস্তায় হাঁটতে হবে বলে পার্টি কংগ্রেসের প্রথমদিনই কারাটের পাশে দাঁড়িয়ে সওয়াল করলেন চার শরিক সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক ও সিপিআইএল লিবারেশন। চলতি বছরে সংঘ পরিবারের পাশাপাশি সিপিআইয়েরও ১০০ বছর। শতবর্ষের প্রথমে এই দুই সংগঠনের কে কোথায় ছিল আর আজ কোথায় দাঁড়িয়ে তাও ভেবে দেখা প্রয়োজন বলে পরামর্শ শরিকদের। বিজেপি ও সংঘ পরিবারকে বারবার আক্রমণের নিশানায় আনলেও বাংলার ক্ষেত্রে তৃণমূলকে নিয়ে নিশ্চুপ থাকলেন শরিক নেতারা। জনসমর্থন কেন ফিরছে না সেই পথ অনুসন্ধানের ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিলেন প্রকাশ কারাট ও শরিকরা নেতারা। এছাড়াও, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বঙ্গ সিপিএম নেতৃত্ব বারবার চিল চিৎকার জুড়লেও কারাট বা শরিকদের এই নিস্তবতা অন্য রাজনৈতিক সমীকরণের বার্তা বহন করছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

বুধবার সকালেই মাদুরাই থেকে পার্টি কংগ্রসের সম্মেলন স্থল তাম্মুকমে যাওয়ার সব রাস্তাই ছিল লাল পতায়কায় মোড়া। একের পর এক লাল মিছিলের ঢেউ আছড়ে পরছিল তাম্মুকম ময়দানে। দেশের অন্যতম প্রাচীন হিন্দুধর্মের শহর এই তাম্মুকম। অথচ কয়েক হাজার বছর কেটে গেলেও এই শহরে মাথা তুলতে পারেনি সংঘ পরিবার বা বিজেপি। কারণ ব্যাখ্যায় মীনাক্ষী মন্দির ট্রাস্টের সদস্য বি এস গণেশন জানান, দ্রাবিড়িয়ান ব্রাক্ষণদের অস্মিতার কাছে বারবার পরাজয় স্বীকার করেছে উত্তর ভারতের হিন্দু ধ্বজাধারীরা। তাই হয়তো আজও এখানে লাল ঝান্ডার দাপট রয়ে গিয়েছে। বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের ধর্ম ও বিভাজনের রাজনীতির মোকাবিলায় পাল্টা ধর্মের রাজনীতির প্রয়োজন নেই, তা প্রমাণ করেছে মাদুরাই। তবে নিজেদের নীতি ও আদর্শের ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে। একদিনে হবে না, তবে একদিন হবেই বলে জানান তিনি। তারই প্রসঙ্গে টেনে লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য় জানান, বামপন্থী আন্দোলনের ১০০ বছরের ইতিহাস খতিয়ে দেখতে হবে। কেন বামেরা দেশজুড়েই কোণঠাসা আর সংঘ পরিবার মহীরুহে পরিণত হল।

Advertisement

তাঁর মতে, কয়েকটি নির্বাচনে পরাজয়ের পরই বাম দলগুলি নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে। কিন্তু উলটো পথে হাঁটার প্রয়োজন ছিল। সেটা বুঝেই গেরুয়া শিবিরের বিপদের কথা মাথায় রেখেই নিজেদের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে কাছাকাছি আসছে বামপন্থীরা। এই ঐক্যকে বজায় রেখেই ধর্মীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সেইসঙ্গে ২৬ সালের মধ্যে মাওবাদী বিপদমুক্ত করার যে ডাক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিয়েছেন তাকে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস’ বলে জানান দীপঙ্কর।

তবে সম্মেলনের শুরুতেই সংঘ পরিবার ও বিজেপিই যে প্রধান শত্রু, সেই সুর বেধে দেন প্রকাশ কারাট। বিজেপি সরকার যে অর্থনীতির পথে হাঁটছে তা সংঘের বেঁধে দেওয়া বিধান। আর ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে। তাতে দেশের গরিব মানুষের বিপদ বাড়ছে বলে মনে করেন কারাট। তাই বাম ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে একজোট হয়ে রাস্তায় নেমে এর বিরোধিতা করতে হবে বলে জানান তিনি। সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা ও ফরওয়ার্ড ব্লকের শীর্ষ নেতা দেবরাজনের বক্তব্যেও ছিল গেরুয়া শিবিরের বিরোধিতা। বিজেপি বিরোধী সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে একত্র করে রাস্তায় নামার পক্ষে সওয়াল করেন তাঁরা।

বারবার গেরুয়া শিবিরকে রাজনৈতিক শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করলেও একবারের জন্যও তৃণমূলের নাম মুখে আনেননি কেউই। অথচ বঙ্গ কমরেডকুলের নেতারা বিজেপি ও তৃণমূলকে একই পংক্তিতে বসিয়ে ধর্মের রাজনীতির অভিযোগ করে আসেন। তাঁদের চিন্তাভাবনার সঙ্গে শীর্ষ নেতৃত্বের ভাবনার ফারাক রয়েছে উদ্বোধনের প্রথম দিনই তা স্পষ্ট করে দিলেন কারাট, দীপঙ্কর, রাজা ও দেবরাজনরা। অন্যদিকে, পার্টির সমস্ত কমিটি থেকে অব্যাহতি নেওয়া বিমান বসু পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের সূচনা করেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement