সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে করোনা ভ্যাকসিনের (COVID vaccine) দ্বিতীয় ডোজ শুরু হচ্ছে। যাঁরা প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাঁরা এসএমএসের মাধ্যমে দ্বিতীয় ডোজের দিনক্ষণ জানতে পারবেন। পাশাপাশি, এদিন ICMR দেশের তৃতীয় দফার সেরো সার্ভের রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষের এখনও করোনা (Coronavirus) সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রথম ডোজের ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কথা আগেই জানানো হয়েছিল। ১৬ জানুয়ারি দেশজুড়ে কোভিড ১৯ টিকাকরণ কর্মসূচির সূচনা হয়। সেদিনই যাঁরা প্রথম ডোজ পেয়েছিলেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি তাঁরা দ্বিতীয় ডোজের টিকা পাবেন। বৃহস্পতিবার দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সাপ্তাহিক বৈঠকে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভিকে পল এই খবর জানিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সামনে একটা বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য অধিকর্তা। প্রথমবার কোনও ব্যক্তিকে কোভিশিল্ড বা কোভিভ্যাকসিনের মধ্যে যে করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছিল দ্বিতীয় ডোজের ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি যাতে একই টিকা পান সেটা সুনিশ্চিত করায় সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ বলেই তারা মনে করছেন বলেই সেই সময় স্বাস্থ্যকর্তা জানিয়েছিলেন।
এদিকে, এদিনের বৈঠকেই দেশে তৃতীয় দফার সেরো সার্ভের রিপোর্ট প্রকাশ করেন আইসিএমআরের ডিজি বলরাম ভার্গব। রিপোর্টে গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়েই দেশের ২১.৪ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২৮ কোটি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে তথ্যে উঠে এসেছে। এই সমীক্ষা গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে চলতি ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। এবারেও দেশের ২১টি রাজ্যের ৭০টি জেলার এবং আগের সেই ৭০০ গ্রামেও সমীক্ষা হয়েছে। ১০ বছর থেকে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সি মিলিয়ে মোট ২৮,৫৮৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে এই সমীক্ষা হয়েছে। সেরো সমীক্ষায় যে হিসাব ধরা পড়েছে তাতে এখনও দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষের করোনা সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেই মন্তব্য করেছেন পল। তাই করোনা সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। করোনা টিকার ক্ষেত্রে একটি ভায়ালেরও যাতে কার্যক্ষমতা বাতিল না হয়ে যায় অর্থাৎ ব্যবহার করার আগেই কার্যকারিতার মেয়াদ শেষ হয়ে না যায়, সেদিকে সরকারের তীক্ষ্ণ নজর রয়েছে আশ্বস্ত করেছেন পল।
স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাকরণ পর্ব মিটে গেলেই তাঁরা দ্বিতীয় সারিতে থাকা পঞ্চাশোর্ধ্ব এবং কোমর্বিডিটি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের টিকাকরণের কাজ শুরু করে দেবেন এবং সেই কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হবে বলে এদিন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। দেশে করোনা সংক্রমণ কমলেও এখনও রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে মোট আট জায়গায় পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই সমস্ত জায়গাগুলিতেই করোনা সংক্রমণের হার জাতীয় গড়ের তুলনায় বেশি। এদের মধ্যে অবশ্য কেরল ও মহারাষ্ট্র, দুই রাজ্য প্রথম সারিতে রয়েছে। বর্তমানে দেশের মোট করোনা সংক্রমণের ৭০ শতাংশই এই দুই রাজ্য থেকে। তবে তিনি আরও জানিয়েছেন, বিশ্বের করোনা পরিস্থিতির তুলনায় ভারতের অবস্থান অনেকটাই ভাল। গত তিন সপ্তাহে দেশে ৪৭টি জেলা থেকে একটিও নতুন সংক্রমণ নেই। ২৫১টি জেলায় করোনার কারণে একটিএ মৃত্যু হয়নি। এই তথ্যকে ‘সুখবর’ বলেই উল্লেখ করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.