ফাইল ছবি
ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: বাইরে সুস্থতার মুখোশ। ভিতরে ঘাপটি মেরে কাল-জীবাণু! এতদিন যা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও স্বীকৃতি ছিল না, তাতেই এবার সিলমোহর দিল ICMR। দেশের শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষায় প্রকাশ, ভারতের অন্তত ৪০% জনগোষ্ঠী নোভেল করোনায় সংক্রমিত (Corona Virus) হলেও আপাত ভাবে দিব্যি সুস্থ! কোভিডের কোনও উপসর্গ (Symptoms) তাদের মধ্যে নেই। ভাইরাস শরীরে নিয়ে তারা নিশ্চিন্তে সামাজিক জীবন যাপন করছে!
আইসিএমআর দেশজুড়ে সমীক্ষাটি করেছিল গত মে-জুন মাসে। রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, দেশে কোভিড সংক্রমিতের আসল চিত্র স্পষ্ট নয়। গত কয়েক মাসে কোভিড অতিমারীর সংক্রমণে ঠিক কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তা-ও অজানা। কারণ, অত্যন্ত কম সংখ্যক নাগরিক পরীক্ষার আওতায় এসেছে। বস্তুত আইসিএমআরের এই সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই ‘হার্ড ইমিউনিটি’র তত্ত্ব আরও একবার সামনে চলে এসেছে। ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিক্যাল রিসার্চে প্রকাশিত রিপোর্ট মোতাবেক, দেশের ৬৮টি জেলায় টানা দু’মাস ধরে ৬৪,৬৮,৩৩৮ জনের উপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, জনসংখ্যার বিশাল একটা অংশ আরটিপিসিআর বা অ্যান্টিজেন টেস্টের নাগালের বাইরে। ফলত ধরে নেওয়া যায়, জানুয়ারি থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত অনেক মানুষ অজান্তে সংক্রমিত হয়েও সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আবার অনেকে মারা গেলেও কারণ অজ্ঞাত, কেননা তাঁদের টেস্ট হয়নি। রেকর্ডও নেই।
আইসিএমআরের এ হেন রিপোর্ট হাতে পেয়ে গত চব্বিশ ঘণ্টায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেছেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, “ভাইরাসের যা ট্রেন্ড, তাতে আগামী কয়েক মাসে দাপট আরও বাড়তে পারে। তবে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য, মৃত্যু কমানো। তাই আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ডা সংঘমিত্রা ঘোষেরও একই বক্তব্য। “সংক্রমণের হার আরও বাড়বে। তবে সংক্রমণ বাড়া মানেই মৃত্যু নয়। ভাইরাস ঠেকানোর স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছু জনগোষ্ঠীর মধ্যে তৈরি হবে।”– বলছেন তিনি, “আমরা এতদিন যা বলছিলাম, এখন আইসিএমআর তা মেনে নিল।” করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে অস্থায়ী কন্টেনমেন্ট জোন বানিয়ে টেস্ট এবং আইসোলেশনে জোর দিয়েছে আইসিএমআর। যদিও এ রাজ্যে নতুন করে কন্টেনমেন্ট জোন করা হবে কি না, সে সম্পর্কে স্বাস্থ্য কর্তারা মন্তব্য করতে চাননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.