শুভঙ্কর বসু: নোভেল করোনা ভাইরাসের জেরে বাংলাদেশে আটকে পড়া ৫০০ ভারতীয় চিকিৎসক পুরোপুরি সুরক্ষিত। যদিও এই পরিস্থিতিতে তাদের দেশে ফেরানো সম্ভব নয়। তাদের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের। আটকে পড়া ছাত্রদের দেশে ফেরানো নিয়ে দিল্লি হাই কোর্টে দায়ের হওয়া একটি মামলার শুনানিতে ভিডিও কনফারেন্সে একথা জানিয়েছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ‘ভারচুয়াল প্লাটফর্ম’-এর মাধ্যমে আটকে পড়া সমস্ত পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রতিদিন যোগাযোগ রাখছেন সেদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, চারজন অতিরিক্ত রাষ্ট্রদূত এবং নোডাল অফিসাররা। ওই ৫০০ জন ছাত্রকে হোস্টেল ছাড়তে নিষেধ করা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় খাবার-সহ যাবতীয় নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে মন্ত্রক।
করোনা ভাইরাসের দাপাদাপি বাড়তেই এদেশের মতই বাংলাদেশেও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় হাসিনা সরকার। বন্ধ হয়ে যায় সেখানকার মেডিকেল কলেজগুলিও। বাংলাদেশে মোট ১১৪টি মেডিকেল কলেজে সব মিলিয়ে মোট ৬০০০ ভারতীয় ছাত্র পড়াশোনা করে। লকডাউন ঘোষণার আগে এদের মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজার ছাত্র দেশে ফিরতে সক্ষম হলেও ৫০০ ছাত্র আটকে পড়ে। মন্ত্রকের তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, করোনার ছায়া পড়তেই বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ করে ভারত সরকার। সেদেশের সরকারের সহযোগিতায় সেখানে পাঠরত ছাত্রদের ভারতে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়। ধাপে ধাপে তাদের ফেরানোর ব্যবস্থা হয়েছিল। এর মাঝেই আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। তার জেরে ওই ৫০০ ছাত্রকে আর দেশে ফেরানো সম্ভব হয়নি।
এরপরই ভারতীয় হাই কমিশন তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়-সহ সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কলেজগুলির মেস ও ক্যান্টিন খোলা রাখার অনুরোধ জানানো হয়। এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বলা হয়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার সব রকম সহযোগিতা করছে বলে আদালতে জানিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। যেহেতু বেশিরভাগ মেডিকেল কলেজগুলিই হাসপাতাল লাগোয়া তাই আপৎকালীন সমস্ত সহযোগিতায় তারা পাবে বলে মন্ত্রককে আশ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ সরকার। পাশাপাশি কোন রকম অসুবিধা হলে তৎক্ষণাৎ পড়ুয়াদের অতিরিক্ত রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
শুধু বাংলাদেশ নয় করোনার জেরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আটকে রয়েছেন একাধিক ভারতীয় পড়ুয়া। বিদেশমন্ত্রক আরও জানিয়েছে, তাদের সুরক্ষার জন্য গত ১৫ মার্চ একটি COVID-19 সেল তৈরি করেছে বিদেশ মন্ত্রক। বিভিন্ন দেশে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশনগুলিকে তৎক্ষণাৎ একাধিক সেল, মিশন বা পোস্ট তৈরি করতে বলা হয় । সেইসঙ্গে চালু করা হয় একটি ২৪X৭ হেল্পলাইন। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাঠরতদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদেশমন্ত্রক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.