গৌতম ব্রহ্ম: “বড় বড় ফাঁপা দাবি পেশ করে আয়ুর্বেদশাস্ত্রের বদনাম করা উচিত নয়। বরং প্রোটোকল মেনে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কোভিডরোগীর বাস্তবসম্মত চিকিৎসা করাটাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি।” আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের এমনই পরামর্শ দিলেন দেশের আয়ুশ-সচিব বৈদ্য রাজেশ কোটেচা। আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “আইন মোতাবেক কোভিড চিকিৎসার অধিকার আপনাদের দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রোগী বেশি কাহিল হলে নৈতিক দায়বদ্ধতা মেনে রোগীকে ‘ইন্ডিগ্রেটিভ মেডিসিন’ অর্থাৎ মিলিয়ে-মিশিয়ে পরিষেবা দিতে হবে।”
সম্প্রতি কোভিডের আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ‘বিজ্ঞান ভারতী’ ও ‘নস্য’-সহ বেশ কয়েকটি সংগঠন হেল্পলাইন চালু করেছে, যেখানে বৈদিক মতে কোভিড চিকিৎসার পরামর্শ মিলছে। হেল্পলাইনের ভারচুয়াল উদ্বোধনে কোটেচা ছাড়াও ছিলেন মন্ত্রী জয়ন্ত সহস্রবুদ্ধ, বৈদ্য গীতা কৃষ্ণন, ‘নস্য’-র সর্বভারতীয় সভাপতি বৈদ্য প্রশান্ত তিওয়ারি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কোটেচা বলেন, “কোভিড আক্রান্ত খুব কম রোগীর ক্রিটিক্যাল কেয়ার লাগছে। রোগীদের ৯০ শতাংশই মৃদু্ ও মধ্যম উপসর্গযুক্ত কিংবা উপসর্গহীন, যাঁদের একাংশ আয়ুর্বেদ মতে চিকিৎসা করাতেই পারেন। সেক্ষেত্রে এই হেল্পলাইন রোগীর কাছে পৌঁছনোর সেতু হয়ে উঠবে।” ভারতের প্রাচীন ও ঐতিহ্যশালী চিকিৎসাশাস্ত্রের মহিমা প্রতিষ্ঠিত করার এহেন সুবর্ণ সুযোগ বৈদ্যদেরও হাতছাড়া করা উচিত নয় বলে মনে করেন কোটেচা।
কোভিড পর্বের গোড়া থেকে অতিমারীর বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নেমেছে আয়ুশ মন্ত্রক। গুড়ুচি, অশ্বগন্ধা, আয়ুশ ৬৪-র মতো একাধিক ওষুধে করোনা মোকাবিলার পরামর্শ দিয়েছে। পরে কেন্দ্রীয় সরকার বৈদিক মতে চিকিৎসায় সায়ও দেয়। সম্প্রতি কোভিড চিকিৎসায় ৩০ লক্ষ মানুষের মধ্যে ‘আয়ুশ ৬৪’ ট্যাবলেট বিতরণ শুরু করেছে আয়ুশ মন্ত্রক। হেল্পলাইন তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ১৫৫০ জন ডাক্তার যুক্ত হয়েছেন এই কর্মযজ্ঞে। এবং ২০ মে থেকে ট্রায়ালের পরে ২২ মে থেকে পুরোদস্তুর চালু হয়ে গিয়েছে হেল্পলাইন। এখানে ফোন করলে নিকটবর্তী আয়ুর্বেদ ডাক্তার ও ওষুধের দোকানের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে ওষুধ। চারশোর বেশি মানুষ ইতিমধ্যেই হেল্পলাইন মারফত পরামর্শ নিয়ে আয়ুর্বেদ মতে চিকিৎসা পরিষেবা নিচ্ছেন।
পশ্চিমবঙ্গেও আয়ুর্বেদ মতে করোনা চিকিৎসার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে এই ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। জানা গিয়েছে, রাজাবাজারের শ্যামাদাস বৈদ্যশাস্ত্রপীঠ ও শ্যামবাজারের জে বি রায় আয়ুর্বেদ কলেজে কোভিড হাসপাতাল খোলা হবে। সেখানে রোগীরা চাইলে আয়ুর্বেদ মতে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে পারবেন। পরিদর্শন সেরে দুই হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.