সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দাম্পত্য জীবন সুখের হয়নি। সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন স্বামী কিংবা স্ত্রী অথবা দু’জনেই। কিন্তু, দাবিমতো খোরপোশ না পেয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন স্ত্রী। শেষপর্যন্ত আদালতে নির্দেশে একসময়ে স্ত্রীকে খোরপোশ দিতে বাধ্য হলেন স্বামী। এই ছবিটা কী এবার বদলাতে চলেছে? একটি মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আদালত স্বামীকে খোরপোশ দিতে বাধ্য করতে পারে না। তবে মামলা চলাকালীন স্ত্রী প্রয়োজন মেটানোর জন্য স্বামীকে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা আদালতে জমা রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আদর্শ গোয়েল ও বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের ডিভিশন বেঞ্চ।
[তেজপ্রতাপের হুমকির জেরে সুশীল মোদির ছেলের বিয়ের স্থান পরিবর্তন]
একটা সময় ছিল, যখন শত অত্যাচারেও স্বামীর ঘর ছেড়ে আসার কথা ভাবতে পারতেন না মহিলা। বলা ভাল, তাঁদের সেই উপায়ও ছিল না। কিন্তু, সে যুগ আর নেই। মেয়েরাও এখন উচ্চশিক্ষিত। অনেকেই আর্থিকভাবে স্বনির্ভরও। তাই স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার মেনে নিতে একেবারেই রাজি নন তাঁরা। তাই সুখী দাম্পত্য জীবন নয়, বরং ডির্ভোস বা বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনাই বেশ ঘটছে। কিন্তু, মজার বিষয় হল, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ধারণায় এখনও স্ত্রী ও সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব স্বামীকেই নিতে হয়। তাই যৌথ সিদ্ধান্তে বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রেও স্বামীর কাছ থেকে খোরপোশ দাবি করেন স্ত্রীরা। দাবিমতো খোরপোশ না পেলে, সম্পর্কে তিক্ততা আরও বাড়ে। পারিবারিক সমস্যা পৌঁছে যায় আদালতে। তেমনই একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, স্বামীকে খোরপোশ দিতে বাধ্য করতে পারে না আদালত। তবে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলাকালীন স্ত্রী ও সন্তানের জন্য স্বামীকে আদালতে দশ লক্ষ টাকা জমা রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আদর্শ গোয়েল ও বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের ডিভিশন বেঞ্চ। ওই টাকা নিজের ইচ্ছামতো খরচ করতে পারবেন স্ত্রী।
[‘হিন্দু জনসংখ্যা বাড়াতে প্রত্যেক দম্পতিকে চার সন্তানের জন্ম দিতে হবে’]
কিন্তু, কোন মামলার প্রেক্ষিতে এই পর্যবেক্ষণ শীর্ষ আদালতের? চেন্নাইয়ের বাসিন্দা এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পণের দাবিতে অত্যাচার-সহ একাধিক অভিযোগে মামলা করেছেন তাঁর স্ত্রী। মামলার শুনানি চলাকালীন স্বামীকে দশ লক্ষ টাকা অন্তর্বর্তীকালীন খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ দেয় মাদ্রাজ হাই কোর্ট। কিন্তু, সেই নির্দেশ না মানায়, ওই ব্যক্তির জামিন খারিজ হয়ে যায়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের মামলা করেছেন ওই ব্যক্তির আইনজীবী। মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আদর্শ গোয়েল ও বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘আমরা স্ত্রীকে খোরপোশ দেওয়ার জন্য স্বামীকে বাধ্য করতে পারি না। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মানবিক সম্পর্ক।’ মামলাকারীকে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, ‘আপনি স্ত্রী ও সন্তানের জন্য নিম্ন আদালতে দশ লক্ষ টাকা জমা রাখুন। আপনার স্ত্রী সেই টাকা ইচ্ছেমতো খরচ করতে পারবেন। আপনি যদি এই প্রস্তাবে রাজি থাকেন, তাহলে আপনাকে জামিন দেওয়া হবে।’ বিচারপতিদের এই রায়ের পর আর কথা বাড়াননি ওই ব্যক্তির আইনজীবী।
[দেশের মেট্রো মানচিত্রে নয়া সংযোজন নিজামের শহর, উদ্বোধনে মোদি]
কিন্তু, শেষপর্যন্ত যদি ওই দম্পতির ডিভোর্স হয়ে যায়, তাহলে কী আবার নতুন করে স্ত্রীকে খোরপোশ দিতে হবে? সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বিবাহ বিচ্ছেদের পর ওই ব্যক্তির স্ত্রী যত টাকা খোরপোশ দাবি করবেন, এই দশ লক্ষ টাকা ধরেই তার হিসেব করতে হবে।
[পরিশ্রমের মূল্য পেলেন বিধবা মা, প্রশাসনিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নজির তিন কন্যার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.