সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের ‘Name and Shame’ পোস্টার দ্রুত সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিল এলাহাবাদ হাই কোর্ট। বিতর্কিত সমস্ত হোর্ডিং সরিয়ে ১৬ মার্চের মধ্যে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে রিপোর্ট দিতে হবে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে। সোমবার এমনই নির্দেশ দিয়েছে আদালতের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। একইসঙ্গে যোগী প্রশাসনকে ‘নির্লজ্জ’ বলে কটাক্ষ করেন বিচারপতি। প্রসঙ্গত, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন সমাজকর্মী, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। সেই সমস্ত আন্দোলনকারীদের নাম ও বিস্তারিত তথ্য দিয়ে তৈরি করা পোস্টার সারা শহরে সাঁটানো হয়। এরপরই আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করে। আদালতের এই রায়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের কার্যত মুখ পুড়ল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
Allahabad High Court has ordered to remove the hoardings put up by Uttar Pradesh government, with names, addresses and photos of those who were accused of violence during protests against #CitizenshipAmendmentAct
— ANI UP (@ANINewsUP) March 9, 2020
রবিবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুরের বেঞ্চে চলে শুনানি। শুনানি চলাকালীন যোগী সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন প্রধান বিচারপতি মাথুর। তিনি বলেন, “সিএএ বিক্ষোভকারীদের নাম, ঠিকানা দিয়ে হোর্ডিং টাঙানো অত্যন্ত অন্যায়। সশরীরে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় ডিসিপি এবং মহকুমা শাসকদের।” তবে শুনানি শেষে কোনও রায় দেয়নি বিচারপতিরা। সোমবার গোপনীয়তার অধিকার নিয়ে সরব হন বিচারপতিরা। তাঁদের কথায়, গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক মানবাধিকারের হিসেবে গণ্য করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এমনকী দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টও এই স্বীকৃতি দিয়েছে। অথচ সেই অধিকার খর্ব করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। তাই দ্রুত এই পোস্টারগুলি সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশ সরকারের এহেন কীর্তিকলাপকে বেআইনি বলেও উল্লেখ করেছেন বিচারপতি। শুধু তাই নয়, উত্তরপ্রদেশ সরকার সাংবিধানিক মূল্যবোধকে নষ্ট করছে বলেও মতপ্রকাশ করেছেন বিচারপতি।
চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার, গোটা লখনউ শহরের বিভিন্ন রাস্তা ঢেকে যায় বড় বড় হোর্ডিং-এ। এই হোর্ডিং-এ ৫৩ জন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনকারীদের নাম, ছবি-সহ ঠিকানা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। ৫৩ জনের মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরি, সমাজকর্মী মহম্মদ শোয়েব, কবি দীপক কবীরের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। রয়েছে কংগ্রেসের স্থানীয় মহিলা নেত্রী সাদাফ জাফরের নাম-ছবিও। সূত্র মারফৎ খবর, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশেই ওই হোর্ডিংগুলি পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাঙানো হয়েছে। তবে শুধুমাত্র বোর্ডিং টাঙিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি যোগী সরকার, আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদে শহরে যে ক্ষতিপূরণ হয়েছে তাও আন্দোলনকারীদের থেকে আদায় করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.