সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার মার এবং সেই সঙ্গে দোসর জমি-জট। ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন প্রকল্প এখন অথৈ জলে। পরিস্থিতি এমনই যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) স্বপ্নের এই প্রকল্প নাকি ৫ বছর পর্যন্ত পিছিয়ে যেতে পারে। যে প্রকল্প ২০২৩ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল, সেটা কিনা শেষ হতে পারে ২০২৮ সালে গিয়ে। যদিও কেন্দ্রের তরফে সরকারিভাবে এ নিয়ে এখনও কিছু ঘোষণা করা হয়নি।
মুম্বই থেকে আহমেদাবাদের মধ্যেকার ৫০৮ কিলোমিটার লম্বা এই বুলেট ট্রেন (Bullet train) প্রকল্পের কাজ হওয়ার কথা জাপান থেকে ৮০ শতাংশ ঋণ নিয়ে। জাপান সরকারের প্রতিশ্রুতিমতো মাত্র ০.১ শতাংশ সুদ এবং ১৫ বছরের মোরাটরিয়ামে এই ঋণ পাওয়ার কথা ভারতের। জাপানের সাহায্যে হওয়া এই প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ার কথা সম্পূর্ণ জাপানি প্রযুক্তিতে এবং জাপানি সংস্থাগুলির মাধ্যমে। কিন্তু এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই প্রকল্পে মাটির তলা দিয়ে যে ২১ কিলোমিটার লম্বা লাইন হওয়ার কথা, সেই ২১ কিলোমিটার লাইন তৈরিতে জাপানি সংস্থাগুলি আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তাছাড়া করোনার জন্য গোটা বিশ্বের অর্থনীতিই ধাক্কা খেয়েছে। যে কারণে বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম। এই প্রকল্প সঠিক সময়ে শেষ করাতে সেটিও অন্তরায় হয় দাঁড়িয়েছে।
আরও একটি বড় সমস্যা হল জমি-জট। রেল (Indian Railway) সূত্রের খবর, ২০ হাজার কোটির এই প্রকল্পের মোট ৬৩ শতাংশ জমি এখনও পর্যন্ত অধিগ্রহণ সম্ভব হয়েছে। গুজরাটে ৭৭ শতাংশ এবং দাদরা নগর হাভেলিতে ৮০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা গেলেও মহারাষ্ট্রে মাত্র ২২ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ সম্ভব হয়েছে। গুজরাটের নবসারি, মহারাষ্ট্রের পালঘরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জমি পাওয়া যায়নি। মুশকিল হল, মহারাষ্ট্রে আবার এখন বিরোধীদের সরকার। সুতরাং প্রত্যাশিত সহযোগিতা রাজ্য সরকার করছে না। করোনাও বড় বাধা। রেলের আধিকারিকরা বলছেন, করোনার জন্য অনেক কাজের টেন্ডারই ডাকা যায়নি। আবার টেন্ডার ডাকলেও, সেটা কার্যকর হয়নি।
আর এসবের জন্যই এই প্রকল্প পিছিয়ে যেতে পারে। তাও ১-২ মাস নয়। পুরো পাঁচ বছর। সরকারের টার্গেট ছিল ২০২২ সাল নাগাদ অন্তত কিছুটা হলেও এই প্রকল্প চালু করে ফেলা। এবং ২০২৩ সালের মধ্যে তা সম্পূর্ণ করে ফেলা। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তাতে পুরো প্রকল্প শেষ হতে ৫ বছর লেগে যেতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.