সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ঘুষখোর পুলিশ’-কথাটি বহু প্রচলিত৷ অভিযোগও ভুরি ভুরি৷ তবে তার মধ্যেও ব্যতিক্রম আছে৷ জনগণের কাছে তাঁরা আলাদা সমীহ আদায় করে নেন৷ কিন্তু ধাক্কা লাগে তখনই, যখন এক পুলিশকর্মীর প্রতি এতদিনকার ধ্যানধারণা এক লহমায় ভেঙে যায়৷ তেমনই হল তেলেঙ্গানার এক কনস্টেবলের ক্ষেত্রে৷
স্বাধীনতা দিবসেই পাল্লে তিরুপতি রেড্ডি নামে মাহবুবনগর থানার এক কনস্টেবল সবচেয়ে দক্ষ পুলিশ কর্মী হিসেবে পুরস্কৃত হন৷ তাঁর হাতে এই সম্মান তুলে দিয়েছিলেন রাজ্যের আবগারি মন্ত্রী ভি শ্রীনিবাস গৌড়৷ সঙ্গে ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার রিমা রাজেশ্বরী৷ তিনিও রেড্ডির কাজের প্রশংসা করেন৷ ওই এলাকায় হাজারও প্রতিকূলতার মধ্যে কীভাবে দক্ষতার সঙ্গে রেড্ডি কাজ করেন, তা ব্যাখ্যা করেন পুলিশ সুপার৷
এমন সম্মান পাওয়ার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি৷ রেড্ডি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারণা দেখা দিল৷ ১৭ হাজার টাকা-সহ দুর্নীতি দমন শাখার অফিসারদের হাতে গ্রেপ্তার হলেন তেলেঙ্গানার ‘বেস্ট কনস্টেবল’ তিরুপতি রেড্ডি৷ তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তদন্তকারীরা তিরানব্বই লক্ষ নগদ টাকা এবং ৪০০ গ্রাম সোনা উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা৷ তাঁকে দুর্নীতি দমন আদালতে পেশ করে বিভাগীয় হেফাজতে নিয়েছেন অ্যান্টি কোরাপশন ব্রাঞ্চ৷
রেড্ডির বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন রমেশ নামে এক ব্যবসায়ী৷ তিনি বালি ব্যবসায়ী৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বালি সরবরাহ করেন৷ তিনিই কনস্টেবল রেড্ডির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, সঙ্গে বৈধ কাগজপত্র থাক সত্ত্বেও রেড্ডি বালিবোঝাই গাড়ি আটকে দিচ্ছেন৷ মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়েই গাড়ি ছাড়তে রাজি তিনি৷ বেশ কয়েকবার তাঁর এই অত্যাচার সহ্য করার পর তিতিবিরক্ত হয়ে রমেশ পুলিশের দ্বারস্থ হন৷ তাঁর অভিযোগ, এভাবে বালিবোঝাই গাড়ি আটকে দেওয়ায় তাঁর ব্যবসায় অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে৷ রমেশের অভিযোগের ভিত্তিতেই কনস্টেবল রেড্ডির বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন শাখা৷ তাতেই গ্রেপ্তার হন রেড্ডি৷ আর সেইসঙ্গে সেরা কনস্টেবলের সম্মান পেয়ে যতটা শ্রদ্ধা অর্জন করেছিলেন, তা পুরোপুরি ধূলিসাৎ হয়ে গেল৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.