মামলা দায়ের করেছেন এক বিশিষ্ট সাংবাদিক, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বর্ষীয়ান আইনজীবী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আদালত অবমাননার আইন বাতিলের দাবি। অর্থাৎ আদালতের অধিকার খর্ব করার চেষ্টা। সেই দাবি নিয়ে মামলা আবার সেই আদালতেই। ‘বিচিত্র’ এই ভারতীয় গণতন্ত্রে যে সবই সম্ভব, তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক এন রাম (N Ram), প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ শৌরি (Arun Shourie) এবং বর্ষীয়ান আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ(Prashant Bhushan)। আদালত অবমাননার আইন বাতিলের দাবিতে শীর্ষ আদালতে (Supreme Court) মামলা দায়ের করলেন তাঁরা।
তিন হেভিওয়েট মামলাকারীর দাবি, ১৯৭১ সালে চালু হওয়া এই আদালত অবমাননার আইন আসলে দেশের সংবিধানের মূল ভিত্তির বিরোধী। ভারতীয় সংবিধান সবাইকে বাক স্বাধীনতা অর্থাৎ নিজেদের অভিব্যক্তির বহিঃপ্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছে। কিন্তু আদালত অবমাননার আইন সেই স্বাধীনতার পরিপন্থী। সংবিধানের ৩২ নং অনুচ্ছেদের অধীনে করা মামলায় বলা হয়েছে,”এই আইনটি অস্পষ্ট এবং ইচ্ছামতো লাগু করা যায়। এটি সংবিধানের ১৯(এ)(১) নম্বর ধারায় যে অভিব্যক্তির স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, তা লঙ্ঘন করে।” এন রাম, অরুণ শৌরি, প্রশান্ত ভূষণরা বলছেন, এই আইনটির একাধিক ধারা পুরোপুরি অসাংবিধানিক এবং এটি সংবিধান প্রস্তাবনার মূল ভিত্তির বিরোধী। মামলাকারীরা বলছেন, সংবিধান যখন বাক স্বাধীনতার অধিকার দিচ্ছে তখন আদালতের সমালোচনা করার অধিকারও দেওয়া উচিত।
উল্লেখ্য আদালত অবমাননার আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি লিখিত বা মৌখিকভাবে বা ইঙ্গিতের মাধ্যমে যদি এমন কোনও মন্তব্য করেন বা এমন কোনও কাজ করেন, যা আদালতের অধিকার ক্ষুণ্ন করে বা আদালতের পক্ষে অবমাননাকর হয়, তাহলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। মজার কথা হল, যে তিনজন এই আদালত অবমাননার আইন বাতিলের দাবিতে আদালতে গিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই কোনও না কোনও সময় আদালত অবমাননার অভিযোগ উঠেছে। প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে এখনও দুটি আদালত অবমাননার মামলা চলছে। এন রামের বিরুদ্ধেও একটি মামলা চলছে। অতীতে অরুণ শৌরির বিরুদ্ধেও এই ধরনের মামলা চলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.