দীপাঞ্জন মণ্ডল, নয়াদিল্লি: আসন্ন লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে মঙ্গলবার দলের ইস্তাহার প্রকাশ করল কংগ্রেস। আর সেই ইস্তাহার সামনে আসতেই তা দেশের জন্য ‘বিপজ্জনক’ বলে মন্তব্য করে পুরোদস্তুর আক্রমণে নেমে পড়লেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর দাবি, এই ইস্তাহার অবাস্তব। যা বাস্তবায়িত করা সম্ভব নয়। উলটে কংগ্রেস এমন সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, দেশের অখণ্ডতাই বিপন্ন হয়ে পড়বে। দেশ টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। দেশদ্রোহিতা আইন, সামরিক বাহিনীর আফস্পা আইন সংশোধন নিয়ে রাহুলের দেওয়া প্রতিশ্রুতির দিকেই ইঙ্গিত করেছেন জেটলি।
কংগ্রেসের ইস্তাহার প্রকাশ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করেন জেটলি। সেখানেই কংগ্রেসের এই ইস্তাহারের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। অভিযোগ করেন, দেশকে টুকরো টুকরো করার চক্রান্তই রয়েছে কংগ্রেসের ইস্তাহারে। জেটলি বলেন, গত ৭২ বছরে বিভিন্ন প্রান্তে হিংসার সাক্ষী থেকেছে দেশ। কংগ্রেসের নীতিহীন সিদ্ধান্তের মাশুল গুনছে জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ। কিন্তু কংগ্রেস আফস্পা আইন সংশোধনের কথা বলছে। যা দেশের পক্ষে মারাত্মক। কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তে নতুন করে জঙ্গি ও মাওবাদী কার্যকলাপ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলেই জানিয়েছেন জেটলি।
তিনি দাবি করেন, নরেন্দ্র মোদির জমানায় মাওবাদী উপদ্রব, জঙ্গি হামলা কমেছে। জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তাঁর প্রশ্ন, ইস্তাহারে কেন কাশ্মীরের পণ্ডিতদের নিয়ে কিছু বলা হয়নি? অরুণ জেটলির মত, কংগ্রেসের এই ইস্তাহারে প্রভাব রয়েছে ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’-এর। জম্মু ও কাশ্মীর নীতি নিয়ে কংগ্রেসের ইস্তাহারে যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে তাকে কটাক্ষ করে জেটলি বলেছেন, “কংগ্রেসের ইস্তাহারে যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি দেশের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। ইস্তাহারের জন্য কংগ্রেসের নিশ্চয়ই একটি খসড়া কমিটি ছিল। কিন্তু যখন জম্মু ও কাশ্মীরের বিষয়টি উঠে এসেছে, সেখানে মনে হচ্ছে কংগ্রেসের টুকরে টুকরে গ্যাং-এর প্রভাবও রয়েছে।”
জেটলির কথায় জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে গান্ধী পরিবার যে ঐতিহাসিক ভুল করে এসেছে, সেটি আরও ভয়ানক স্তরে নিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস তাদের এই সমস্ত বিপজ্জনক প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে। তাই দেশের মানুষ কংগ্রেসের এই ইস্তাহারকে সমর্থন করবে না বলেই দাবি করেছেন তিনি। এমনকী কংগ্রেস ইস্তাহারে যে দেশদ্রোহিতা আইন তুলে দেওয়ার কথা বলেছে, তা নিয়েও তোপ দেগেছেন জেটলি। এই প্রসঙ্গে জেটলি বলেন, “কংগ্রেস ইস্তাহারে বলেছে ১২৪এ আইন তুলে দেওয়া হবে। অর্থাৎ যারা দেশের বিরুদ্ধে কাজ করবে তাদের বিপক্ষে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। যাদের কাছে সন্ত্রাসবাদ ও মাওবাদ কোনও অপরাধ নয়, সেই ধরনের দল একটি ভোটও পাওয়ার যোগ্য নয়।”
জিএসটি নিয়ে কংগ্রেসের ইস্তাহারে যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে তারও সমালোচনা এদিন করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কংগ্রেস বলেছে যে সবকিছুতে একই জিএসটি হার করা হবে। অর্থাৎ কংগ্রেসের মতে গরিবরা জামাকাপড়, খাবারের উপর যে হারে জিএসটি দেয়, সেই একই হারে জিএসটি বিলাসবহুল গাড়ির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য! এই ধরনের প্রতিশ্রুতির কোনও মানেই হয় না।” কংগ্রেসের প্রস্তাবিত ‘ন্যায়’ যোজনা নিয়েও এদিন একহাত নিয়েছেন জেটলি। তাঁর কটাক্ষ, “এই ধরনের প্রকল্পের কোনও ভিত্তি নেই। কারণ কংগ্রেস নিজেই জানে না কীভাবে এই যোজনা চালু করবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.