সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: কংগ্রেস (Congress) জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছে। স্বীকার করে নিয়েও রাহুল গান্ধী দাবি করলেন, বিজেপিকে হারাতে পারে একমাত্র কংগ্রেসই। কোনও আঞ্চলিক দল নয়। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইটা আদর্শের। আর আঞ্চলিক দলগুলির কোনও আদর্শ নেই। বিজেপিকে (BJP) হারাতে হলে তাই কংগ্রেসকে কংগ্রেসের মতো করেই লড়তে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে। এমনই দাবি দলের প্রাক্তন সভাপতির।
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে (2024 lok Sabha Election) বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট করে লড়াই করা উচিত কংগ্রেসের। দিন কয়েক আগেই প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেস হাই কম্যান্ডকে এই পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু রাহুল এদিন সেই পরামর্শ কার্যত উড়িয়ে দিলেন। রাহুলের (Rahul Gandhi) সাফ কথা, কোনও আঞ্চলিক দল বিজেপিকে হারাতে পারবে না। কারণ এটা আদর্শের লড়াই। আর আঞ্চলিক দলগুলির নির্দিষ্ট আদর্শ নেই। আঞ্চলিক দলগুলি আলাদা আলাদা উদ্দেশ্যে লড়াই করে। আগামী দিনে দেশে আগুন জ্বলবে। যত ওরা মানুষকে অবদমিত করার চেষ্টা করবে, তত আগুন জ্বলবে। কংগ্রেসের লড়াই মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করার লড়াই। কংগ্রেস ছাড়া কেউ গোটা দেশকে একত্রিত করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে পারবে না। কারণ কংগ্রেসই একমাত্র সবার দল। গোটা দেশের কেউ বলতে পারবে না, কংগ্রেসের দরজা আমার জন্য বন্ধ।”
কিন্তু সেই লড়াইয়ের জন্য কংগ্রেস কি প্রস্তুত? রাহুল এদিন নিজের স্বীকার করে নিয়েছেন, “আগে আমাদের মানুষের সঙ্গে যে যোগাযোগ ছিল, সেটা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। সেই যোগাযোগ আমাদের আবার তৈরি করতে হবে। এটা আমাদের দায়িত্ব।” রাহুলের বক্তব্য, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের এই কাজ ফাঁকি দিয়ে হবে না। পরিশ্রম করতে হবে। ঘাম ঝরাতে হবে। মাসের পর মাস মানুষের মধ্যে পড়ে থাকতে হবে। কংগ্রেস যে প্রচারে, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অন্যান্য দলের থেকে পিছিয়ে পড়েছে, সেটাও স্বীকার করে নেন রাহুল। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি এদিন জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেস আগামী দিনে তরুণদের তুলে আনবে। এক পরিবার-এক পদ নীতির আদর্শ কার্যকর করবে।
দলের সভাপতি পদ তিনি বছর দুই আগেই ছেড়েছেন। এখন গুরুত্বপূর্ণ কোনও পদেও নেই রাহুল গান্ধী। তা সত্ত্বেও এদিন উদয়পুরে দলের নব সংকল্প শিবিরের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন রাহুল। যা নিয়ে কানাঘুষোও শুরু হয়েছে। রাহুল তো এখন শুধুই দলের একজন সাধারণ সাংসদ। তাহলে তিনি কেন ভাষণ দিচ্ছেন? তাহলে কি দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনের পর ফের সভাপতির আসনে দেখা যাবে তাঁকে? রাহুল অবশ্য নিজেও সেই জল্পনা উসকে দিয়েছেন। আবেগঘন সমাপ্তি ভাষণে রাহুল গান্ধী বলে দিয়েছেন, “বিজেপি-আরএসএসের (RSS) বিরুদ্ধে আমার লড়াই আজীবনের। আমি সারা জীবন এই লড়াইটা লড়ে যাব। আপনারা আমার পরিবার। আমি আপনাদের পরিবারের অংশ। আমি আপনাদের সঙ্গে এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত থাকব। আমি ভারত মাতার একটা টাকারও দুর্নীতি করিনি। সত্যি বলতে ভয় পাই না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.