সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেস ফুরিয়ে যায়নি। এখনই বাতিলের খাতায় ফেলা দেওয়া ঠিক নয়। শতাব্দীপ্রাচীন দল ঠিক ফিরে আসবে। এমনই প্রত্যয়ের কথা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মুখে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁর হৃদয়ে হাত চিহ্নের জায়গা এখনও গভীরে। সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তাঁর সমীকরণ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বী মনমোহন সিং বা নোটবাতিল এবং জিএসটি নিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে পরামর্শ। সমস্ত বিষয়ে অকপট কীর্ণাহারের সন্তান।
[আপনার আধার নম্বরটি কি বৈধ? রইল সেটা জানার পদ্ধতি]
রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব ছাড়ার পর এই প্রথম দল, দলের অতীত এবং ভবিষ্যত নিয়ে কথা বললেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। ২০০৪ সালে ইউপিএ যখন সরকার গড়ল তখন সোনিয়া গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য দেশ জুড়ে কংগ্রেস কর্মীরা আন্দোলনে নেমেছিলেন। অন্তরাত্মার কথা বলে সোনিয়া সেই দায়িত্ব নেননি। প্রণব মুখোপাধ্যায় মনে করেন, সোনিয়া প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলে দেশ জুড়ে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ত। ২০০৪ সালে জনাদেশ সোনিয়ার পক্ষেই গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার নিয়ে মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে তাঁর অলিখিত লড়াই নিয়েও মুখ খুলেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। প্রণবের কথায়, ‘‘এটা হতাশার প্রসঙ্গ নয়। যোগ্যতার বিষয় এর সঙ্গে জড়িয়ে। রাজনৈতিক জীবনের বড় সময় আমি রাজ্যসভার সাংসদ ছিলাম। একেবারে শেষ দিকে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। আমি হিন্দি তেমন জানি না। হিন্দি না জানলে দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায় না। কামরাজ বলেছিলেন হিন্দি না জানলে প্রধানমন্ত্রিত্ব নয়।’’ মনমোহনের প্রতি সোনিয়ার আস্থা যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মনে করেন, সেই সময় প্রধানমন্ত্রী পদে যোগ্যতম ছিলেন মনমোহন সিং। প্রশাসনিক অভিজ্ঞতার পাশাপাশি তাঁর অর্থনীতিতে প্রজ্ঞা এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা ছিল। মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে কাজ করতে কোনও সমস্যা হয়নি? এর জবাবে প্রণব বলছেন, এমন কোনও পরিস্থিতি হয়নি।
[তৃণমূলের মদতে তারকেশ্বর মন্দিরে পুজো দিতে বাধা, অভিযোগ দিলীপের]
২০১৪ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস একেবারে ধরাশায়ী হয়েছিল। এর পিছনে কি আসন বাছাইয়ে গলদ, নাকি শরিকদের ঠিকমতো সামলাতে না পারার মতো বিষয় ছিল? প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বলছেন প্রথম ইউপিএতে কোয়ালিশন দারুন ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় তা হয়নি। কংগ্রেস ভেবেছিল ২০০ আসন পাবে। কিন্তু সেই ধারণা ঠিক ছিল না। ২০১২ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইউপিএ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়েও তিনি মুখ খুলেছেন। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির কথায়, তৃণমূল নেত্রীকে সামলানো কঠিন ছিল। তবে উনি কংগ্রেসের বড় সঙ্গী ছিলেন। দেশজুড়ে কংগ্রেস ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে। তবে এই কংগ্রেসম্যান মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন কংগ্রেস আবার ফিরে আসবে। ১৩২ বছরের দলের প্রত্যাবর্তন হবে। কংগ্রেসকে হিসেবের বাইরে করে দেওয়া কিন্তু ঠিক নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.