ফাইল ছবি
সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অন্য কেউ নন, রাহুল গান্ধীই ‘ইন্ডিয়া’-র নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতম ব্যক্তি। ঘরে-বাইরে উলটো হাওয়া ওঠা শুরু হয়ে গেলেও এখনও এমনটাই মনে করছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। ২৪, আকবর রোডের বিশ্বাস, রাহুল গান্ধীকে সমঝে চলতে শুরু করেছে বিজেপি। তাই এই মুহূর্তে এসব বিষয় মাথায় আনার কোনও মানেই হয় না।
তৃণমূল কংগ্রেস তো বটেই, এছাড়াও সমাজবাদী পার্টি, শিবসেনা (উদ্ধব), এনসিপি (শরদ), আম আদমি পার্টি, আরজেডি-সহ বিজেপি বিরোধী একাধিক দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে জোটের নেতৃত্ব তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করা শুরু করেছেন। যুক্তি, একার কাঁধে বাংলার মাটিতে বারবার বিজেপিকে ঘোল খাইয়ে ছেড়েছেন মমতা। তাই সংখ্যাধিক্যের দাদাগিরি করার বদলে তাঁর ট্র্যাক রেকর্ড এবং অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিয়ে বঙ্গ মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই ‘ইন্ডিয়া’-র লাগাম তুলে দেওয়া উচিত। এই দাবি উঠেছে কংগ্রেসের ভিতরেও। প্রবীণ নেতা মণিশঙ্কর আইয়ারও তুলেছেন এই দাবি।
কিন্তু এর কিছুকেই গুরুত্ব দিতে নারাজ কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, একটি জাতীয় দলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে পারে আরেকটি জাতীয় দলই। আঞ্চলিক দলগুলোর অন্যান্য কিছু বাধ্যবাধকতা থেকে যায়, ফলে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে নেতৃত্বের বিষয় তাদের উপর ছাড়া যায় না। পাশাপাশি কংগ্রেসের বিশ্বাস, যেভাবে ক্রমশ নিজেকে পরিবর্তন করেছেন রাহুল গান্ধী, তাতে তাঁকে এখন ভয় পেতে শুরু করেছে বিজেপি। ‘পাপ্পু’ তত্ত্বের বদলে এখন তাঁকে রুখতে রীতিমতো হোমওয়ার্ক করছে বিজেপি। যার ফল সাংসদদের দিয়ে ‘নাটক’ করিয়ে রাহুলের নামে মিথ্যে অভিযোগ করিয়ে পুলিশে অভিযোগ করানো। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সংসদে চলে আসায় সেই চাপ আরও বেড়েছে বিজেপির। তাছাড়া বৃহত্তম বিরোধী দল কংগ্রেসই।
দেশের প্রাচীনতম দলের অন্যতম এক সাধারণ সম্পাদক বলছিলেন, “ভারত জোড়ো যাত্রা রাহুল গান্ধীকে ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করেছে। লক্ষ করে দেখবেন, তার আগে রাহুলজিকে আক্রমণ করার জন্য দ্বিতীয় সারির নেতাদের দায়িত্ব দিত বিজেপি। বড় জোর স্মৃতি ইরানি। আর এখন? নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জে পি নাড্ডাদের আসরে নামতে হয়। দেখলেন না, সংসদে কীভাবে নাটক করল ওরা! আজ পর্যন্ত কাউকে দেখেছেন আইসিইউতে শুয়ে সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দিতে?”
রাহুলের বিরুদ্ধে ‘ইন্ডিয়া’ দলগুলোর সবথেকে বড় অভিযোগ, ‘বড়’ দলের দম্ভ। এই তত্ত্বও উড়িয়ে দিয়েছেন সেই নেতা। বলছিলেন, “শীতকালীন অধিবেশনে কেন তৃণমূল ‘ইন্ডিয়া’-র থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিল তা জানতে রাহুলজি নিজে কথা বলেছিলেন তৃণমূলের লোকসভা দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। ওঁর কাছে চলে গিয়ে পাশের আসনে বসে পড়ে কথা বলেন। জানতে চান, কী সমস্যা হচ্ছে। কোথায় যোগাযোগে ত্রুটি থেকে যাচ্ছে। এরপরও যদি কেউ দাম্ভিক, উন্নাসিক এসব কথা বলে, তা খুবই দুর্ভাগ্যের।” বৃহস্পতিবার থেকে কর্নাটকে শুরু হচ্ছে কংগ্রেসের বর্ধিত কর্মসমিতির বৈঠক। সেখানে আগামী এক বছরের কর্মসূচির নকশা তৈরি করবে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, এবারও রাহুলের নেতৃত্বে ভারত জোড়ো যাত্রার মতো বড় কোনও কর্মসূচি নেওয়া হতে পারে। দেখার শুধু সমমনস্ক দলগুলিকে একত্রিত করতে রাহুলের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.