সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: উদয়পুরের চিন্তন শিবির একেবারে নিস্ফলা নয়, প্রমাণ করতে সক্রিয় হয়ে উঠলেন সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে তিনটি বিশেষ কমিটি গড়ে দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী। উদয়পুরের ‘চিন্তন শিবিরে’ নেওয়া সিদ্ধান্তগুলি কার্যকর করার জন্য তৈরি হয়েছে একটি পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স কমিটি এবং ২০২৪ লোকসভা ভোটে দলের কার্যপদ্ধতি ঠিক করতে তৈরি হয়েছে ‘টাস্ক ফোর্স ২০২৪’ (Congress Task Force 2024)। দু’টি কমিটিই কাজ করবে সোনিয়ার অধীনেই। এছাড়া আরেকটি কমিটি গড়া হয়েছে কংগ্রেসের ঘোষণা করা ‘ভারত জোড়ো’ কর্মসূচি সফল করার জন্যও।
কংগ্রেসের (Congress) পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স কমিটিতে রয়েছেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi), মল্লিকার্জুন খাড়্গে, গুলাম নবি আজাদ, অম্বিকা সোনি, দিগ্বিজয় সিং, আনন্দ শর্মা, কে সি বেণুগোপাল, জিতেন্দ্র সিং। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সোনিয়ার গড়ে দেওয়া এই কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ শিবিরের দুই প্রধান মুখ গুলাম নবি আজাদ এবং আনন্দ শর্মা (Anand Sharma)। আবার একই সঙ্গে গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা রয়েছেন এই কমিটিতে।
তবে এর চেয়ে বড় চমক রয়েছে কংগ্রেসের ‘টাস্ক ফোর্স ২০২৪’ নামের কমিটিতে। যাতে জায়গা পেয়েছেন পি চিদম্বরম, মুকুল ওয়াসনিক, জয়রাম রমেশ, কে সি বেণুগোপাল, অজয় মাকেন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা, রণদীপ সিং সূরজেওয়ালা এবং সুনীল কানুগোলু। এই কমিটির অধিকাংশ নেতাই গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ। তবে সোনিয়ার গড়ে দেওয়া ২৪-এর রণকৌশল তৈরির কমিটিতে একটি নাম চমকপ্রদ। সেটি হল সুনীল কানুগোলু (Sunil Kanugolu)। সুনীল সরাসরি কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি প্রশান্ত কিশোরের মতোই ভোটকুশলী। প্রশান্তের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বহু নির্বাচনের রণকৌশল তৈরি করেছেন। ইতিমধ্যেই সুনীলকে ২০২৩ সালের কর্ণাটক এবং তেলেঙ্গানা নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে কংগ্রেস। আসলে, প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) সঙ্গে আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে। কিন্তু কংগ্রেসে যে পেশাদার ভোটকুশলীর প্রয়োজন, সেটা উদয়পুরের চিন্তন শিবিরেই মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সম্ভবত সেকারণেই সুনীলকে বড় দায়িত্ব দিল হাত শিবির।
‘ভারত জোড়ো’ কর্মসূচি সফল করার জন্য যে কমিটি তৈরি করা হয়েছে তাতে ঠাঁই পেয়েছেন দিগ্বিজয় সিং, শশী থারুর, শচীন পাইলট, রবনীত সিং বিট্টু, কে জে জর্জ, প্রদ্যোত বরদলুই, জিতু পাটওয়ারি এবং সালিম আহমেদ। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই তিন কমিটির একটিতেও বাংলার কোনও প্রতিনিধি নেই। এমনকী দলের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরীকেও রাখা হয়নি কোনও কমিটিতে। অনেকের ধারণা, আগামী দিনে মমতা-সহ আঞ্চলিক শক্তিগুলিকে গুরুত্ব দিতে চায় কংগ্রেস। আর প্রবল মমতা বিরোধী হওয়ার কারণেই অধীরকে কোনও কমিটিতে রাখা হয়নি। যদিও অধীরের বক্তব্য, “এমনিতেই প্রদেশ ও লোকসভার দায়িত্ব। আর কত নেব? অনেকদিন ধরেই আমায় প্রদেশের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার অনুরোধ করছি। দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে একেবারে সঠিক। কে কী বলছে, তা নিয়ে কেন মন্তব্য করব? যার যা খুশি বলুক। যারা এসব বলছে, মনে হচ্ছে তারা খুব খুশী হয়েছে। কাউকে তো অন্তত খুশি করা গেল।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.