স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: দেশের গরিব মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার বিরুদ্ধে নয় কংগ্রেস। তবে যেভাবে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করে প্রধানমন্ত্রী সরকারী যোজনার ঘোষণা নির্বাচনী প্রচারে করেছেন, তাতেই আপত্তি দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দলের। কোন অধিকারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনের আগেই প্রকল্প ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী, সেই প্রশ্নও তুলছে দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল। তাদের দাবি, এই সিদ্ধান্তে আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল প্রধানমন্ত্রীর ‘জুমলা’। সাম্প্রতিক অতীতে বারবার মোদি ও বিজেপি দাবি করেছে, দেশে কমছে অর্থনৈতিক বৈষম্য। ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তের। কংগ্রেসের প্রশ্ন, যদি সত্যিই তা হবে, তাহলে বিনামূল্যে পাঁচ বছর রেশন দেওয়ার প্রসঙ্গ আসছে কেন?
গত শনিবার ছত্তিশগড়ের দুর্গে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, দেশের ৮০ কোটি মানুষকে আগামী পাঁচ বছর প্রতিমাসে বিনামূল্যে মাথাপিছু পাঁচ কেজি করে খাদ্যশস্য দেওয়া হবে। কীভাবে কোনও নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী, এই অভিযোগে ইতিমধ্যেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেস। চিঠি দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলেও। এর পাল্টা দিতে গিয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে রটানোর চেষ্টা চলছে যে, বিরোধীরা গরীব বিরোধী। তাই দরিদ্রদের জন্য নেওয়া প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে তারা। এই আবহে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল কংগ্রেস।
তাদের বক্তব্য, সিদ্ধান্ত নয়। প্রক্রিয়ার বিরোধী তারা। রাজ্যসভা সাংসদ তথা প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ প্রশ্ন তুলেছেন, “কীভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পাশ হওয়ার আগে এই ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী? তাও আবার নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে?” এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে হলে প্রয়োজন ১১ লক্ষ কোটি টাকা। সেই প্রতিবেদনও এদিন নিজের সামাজিকমাধ্যম প্রোফাইলে পোস্ট করেন জয়রাম। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা (Garib Kalyan Anna Yojona) নিয়ে অনেক আগে থেকেই অবশ্য অন্য এক কারণে প্রতিবাদ করে এসেছে কংগ্রেস।
তাদের বক্তব্য, এই প্রকল্প আদতে তাদের আমলে চালু হওয়া জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনকে নতুন নামে পেশ করা। এছাড়াও তাদের বক্তব্য, এই যে প্রধানমন্ত্রী দাবি করে আসেন, অর্থনৈতিক পিরামিডের নিচের দিকে থাকা নাগরিকরা সশক্ত হচ্ছেন, তাঁর সিদ্ধান্ত তো আদতে সেই বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। যদি তাদের হাতে অতিরিক্ত টাকা থেকেই থাকে, তাহলে তো বিনামূল্যে রেশনের প্রয়োজন নেই। তাছাড়া ক’দিন আগেও যে বিজেপি (BJP) নির্বাচনের আগে বিরোধী দলদের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিকে খয়রাতি বলে কটাক্ষ করত, এখন তারাই তো দান-খয়রাতিতে মেতেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.