সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: তিনি প্রার্থী হননি। কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন থেকে বহু আগেই নিজেকে সরিয়ে নেন। ভোট প্রক্রিয়া থেকে যতটা সম্ভব নিজেকে দূরে রেখে ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রায় মন দিয়েছিলেন। বলা ভাল, তিনি সভাপতি হতে রাজি হননি বলেই নির্বাচনের প্রয়োজন পড়ে। তবু, কংগ্রেসের (Congress) সভাপতি নির্বাচনে রাহুল গান্ধীর ছায়া এড়ানো গেল না। ব্যালট পেপারে প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম না থাকা সত্ত্বেও একাধিক কংগ্রেসি ডেলিগেট ‘ভোট’ দিলেন রাহুলকেই।
কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনের ব্যালট পেপারে দু’জনেরই নাম ছিল। একজন শশী থারুর, অপরজন মল্লিকার্জুন খাড়গে (Mallikarjun Kharge)। এমনকী অন্যান্য নির্বাচনের মতো নোটার বিকল্পও রাখা হয়নি। কংগ্রেস নেতাদের আশঙ্কা ছিল, সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ ভোটই নোটায় পড়তে পারত। কারণ গোটা দলই ফের রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) সভাপতির দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলেন। তাই নোটায় ভোট দিয়ে রাহুলকে যদি সবাই বার্তা দিতে যেতেন, সেক্ষেত্রে সাংবিধানিক সংকট দেখা দিত। সেই আশঙ্কা থেকে নোটার (NOTA) বিকল্পও ব্যালট পেপারে রাখা হয়নি। অথচ, তা সত্ত্বেও বহু ব্যালটে দেখা গেল রাহুলের নাম।
কীভাবে? ভোটের নিয়ম অনুযায়ী স্রেফ প্রার্থীদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দিতে হত দলের ডেলিগেটদের। কিন্তু ভোটগণনার সময় দেখা গেল বহু ডেলিগেট, দুই প্রার্থীর কাউকে ভোট না দিয়ে রাহুল গান্ধীর নাম লিখে দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার নিজের নামও লিখে দিয়েছেন ব্যালট পেপারে। কেউ ভোট দিয়ে নিচে সই করে দিয়েছেন। দলের নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান মধুসূদন মিস্ত্রি (Madhusudan Mistri) জানান, এই ধরনের সব ব্যালট বাতিল করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৪১৬টি ভোট বাতিল হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই রাহুল গান্ধীর নাম ব্যালটে লিখে রেখেছিলেন।
আসলে কংগ্রেস নেতাদের রাহুল তথা গান্ধী পরিবার প্রীতি একেবারেই নতুন নয়। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, গান্ধী পরিবারের (Gandhi Family) প্রতি অনুগত বলেই সভাপতি নির্বাচনে এই অনায়াস জয় পেয়েছেন খাড়গে। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, প্রার্থী না হওয়া সত্ত্বেও যেভাবে ভোটাররা রাহুলকে ‘ভোট’ দিলেন, তারা সভাপতি পদে মল্লিকার্জুন খাড়গেকে মানবেন তো। খাড়গে সোনিয়া-রাহুলদের মতামতের বিরুদ্ধে আদৌ কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন তো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.