সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল কংগ্রেস (Congress)। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হবে দলের সভাপতি ও কার্যকরী সমিতির নির্বাচন। তার আগে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল। তারপর ধাপে ধাপে বুথ, ব্লক, জেলা, প্রদেশ কমিটি নির্বাচন। সবশেষে সভাপতি ও কার্যকরী সমিতির নির্বাচন হবে। শুক্রবার দিল্লিতে সাংগঠনিক বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা প্রতিনিধিদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান কংগ্রেসের সেন্ট্রাল ইলেকশন অথরিটির প্রধান মধুসূদন মিস্ত্রি ও সংগঠনের দায়িত্বে থাকা সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল (KC Venugopal)। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সদস্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে দলের নির্বাচন প্রক্রিয়া সবেতেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা গান্ধী পরিবারের কনিষ্ঠতম সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরাকে (Priyanka Gandhi)।
গত বছর ২৬ অক্টোবর বিভিন্ন রাজ্যের প্রদেশ সভাপতি ও দায়িত্বে থাকা সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীরা (Rahul Gandhi)। সেখানে জোর দেওয়া হয়েছিল সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উপর। বলা হয়েছিল নতুন ভোটার, তফসিলি জাতি, উপজাতি, অন্যান্য পিছিয়ে থাকা গোষ্ঠী, আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা গোষ্ঠী, দলিত, নিপীড়তদের আরও বেশি করে সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করতে। সেসময় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দেন প্রিয়াঙ্কা। বলেন, দয়া করে নিজেদের গুরুত্ব বাড়াতে ভুয়ো সদস্য করাবেন না। তিন-চার লাখ ভুয়ো নামের থেকে ৫০ হাজার আসল নাম অনেক ভাল। এতে যেমন দল কতটা জলে আছে তা বোঝা যাবে, তেমনই কোন বুথে কজন প্রকৃত কংগ্রেসী আছে সেই সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
সেই মতোই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নতুন পদ্ধতি আনতে চলেছে কংগ্রেস। এবারের সদস্য সংগ্ৰহে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক সদস্যের নাম এন্ট্রি করার সময় দিতে হবে তাঁর ভোটার কার্ডের নম্বর। একসঙ্গেই দিতে হবে মোবাইল নম্বর। সেখানে আসবে ওটিপি। সেটি দেওয়ার পরই মেম্বারশিপ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। একটি মোবাইল থেকে একজন সদস্যকেই নথিভুক্ত করানো যাবে। এর জন্য তৈরি হচ্ছে আস্ত একটি অ্যাপ।
কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তের পিছনে নতুন সমীকরণের গন্ধ পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। হঠাৎ প্রিয়াঙ্কার প্রস্তাবে কেন এত জোর দেওয়া হচ্ছে? তাহলে কি নতুন সভাপতি হিসেবে সোনিয়া (Sonia Gandhi) বা রাহুলের পরিবর্তে তাঁকে দেখা যেতে পারে? উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে তাঁর নির্দেশেই চলছে কংগ্রেস। যদিও সেখানে বিরাট সাফল্য আশা করছেন না অতি বড় কংগ্রেসিও। এদিকে দলকে নেতৃত্ব দিতে বার বার ব্যর্থ হয়েছেন রাহুল। জি-২৩ গ্রূপের বেশিরভাগের আপত্তি তাঁকে নিয়েই। আবার দলের একটি বড় অংশ এখনও কংগ্রেসের থেকে গান্ধীদের প্রতি বেশি আনুগত্য দেখাতেই পছন্দ করেন। তাহলে কি ধীরে ধীরে এভাবেই প্রিয়াঙ্কার হাতে দলের লাগাম তুলে দিতে চাইছেন সোনিয়া-রাহুলরা? এই উত্তর দেবে সময়, তবে সন্দেহাতীতভাবেই কংগ্রেসে ক্রমশ বাড়ছে প্রিয়াঙ্কার প্রতিপত্তি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.