সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গো-বলয়ে ভোট হবে আর গো-রাজনীতি হবে না, এ যেন ভাবাই যায় না। মধ্যপ্রদেশের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগেও তাই প্রত্যাশিতভাবেই গরু নিয়ে চলছে বিস্তর রাজনীতির টানাপোড়েন। এতদিন পর্যন্ত গরু নিয়ে রাজনীতির যেন কপিরাইট ছিল বিজেপির হাতে, অন্তত বিরোধীরা এমনটাই অভিযোগ করেন। কিন্তু এবার মধ্যপ্রদেশে সেই দায়িত্বটি নিয়ে নিয়েছে বিরোধী কংগ্রেস। ভোট বৈতরণী পার হতে এবার গো-মাতার ভরসায় কংগ্রেসও। কংগ্রেসের অভিযোগ, শিবরাজ সিং চৌহানের সরকার গো-মাতার রক্ষণাবেক্ষণে পুরোপুরি ব্যর্থ, তাঁরা ক্ষমতায় এলে গরুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।
গরু নিয়ে রাজনীতির চিরন্তন ধারা এখনও বদলাতে পারেনি গেরুয়া শিবির। এখনও ভোট এলেই পশুপ্রেম জেগে ওঠে অনেক গেরুয়া নেতারই। কিন্তু এবার কংগ্রেসও বাদ গেল না। আসলে ধর্মীয় আবেগের চটকদারী, আর প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাজারে পিছিয়ে থাকতে রাজি নন রাহুল গান্ধীও। তাই গুজরাট থেকেই তিনি খেলা শুরু করেছেন ‘সফট হিন্দুত্বের’ তাস। যার নির্দশন তাঁর ঘনঘন মন্দির যাত্রা থেকে শুরু করে সর্বশেষ মানস সরোবর যাত্রা। কিন্তু এবার মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস যেটা করল সেটা শুধু অপ্রত্যাশিত বললে ভুল হবে বরং বলতে হবে অনভিপ্রেতও। মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি কমল নাথের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের জমানায় এক্কেবারে নিরাপদ নয় গরুরা। গো-মাতার উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে তাঁরা প্রতিটি পঞ্চায়েতে গোশালা তৈরি করবেন। তিনি বলেন, “ বিজেপি সবসময় মুখেই গো-মাতা গো-মাতা করে, কাজে কিছু করে না।” আশ্চর্যজনকভাবে এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেনি বিজেপিও। তাঁরা বলছে, অবশেষে সুমতি হয়েছে কংগ্রেসের, যে দল গোমাংস খাওয়াকে সমর্থন করে, তাঁরাও শেষপর্যন্ত গোমাতার দ্বারস্থ হতে হল কংগ্রেসকে। কংগ্রেস নেত্রী শোভা ওঁঝা আবার নিজের রাজ্য সভাপতির পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, “রাজ্যের গোশালার অবস্থাগুলি খুবই খারাপ, গরুদের প্লাস্টিক খাওয়ানো হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশই প্রথম রাজ্য যেখানে সরকারিভাবে ৬০৪ টি গোশালা তৈরি করা হয়েছে। রাজ্যে মোট ৯০ লক্ষ গাভী রয়েছে বলে সরকারি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে দেড় লক্ষ্য গাভীকে সরকারি গোশালা গুলিতে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। শিবরাজ সরকারের আমলে অবশ্য গো-রক্ষার নামে হিংসাও বেড়েছে আগের তুলনায়, সরকারি হিসেবে তেমনটাই বলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.