সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাকি সব দলেরই নীতি ধীরে চলো৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য একলা চলোতেই বিশ্বাসী৷ আর তাই কেউ পাশে থাকুক বা না থাকুক, প্রশাসনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ তিনি হচ্ছেনই৷ এক্ষেত্রে সিপিএমের পর কংগ্রেসও তাঁর সঙ্গে থাকছে না বলেই জানিয়ে দিল৷
কালো টাকার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে ভোগান্তি সাধারণ মানুষের৷ মূলত একে হাতিয়ার করেই জাতীয় ক্ষেত্রে কেন্দ্রর বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্দোলন গড়ে তুলতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আর এ ব্যাপারে কোনও গড়িমসি না-পসন্দ তাঁর৷ তড়িঘড়ি তাই রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হচ্ছেন তিনি৷ এই আন্দোলনে পাশে চেয়েছিলেন সিপিএম, কংগ্রেস-সহ সমস্ত বিরোধী দলগুলিকেই পাশে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু এত তড়িঘড়ি রাষ্ট্রপতির কাছে যেতে নারাজ বাকি দলগুলি৷ গতকালই সিপিএমের তরফে সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়ে দিয়েছিলেন, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে ঠিকই৷ সংসদেই এ ব্যাপারে যা বিরোধিতা করার করা হবে৷ এদিকে কংগ্রেস, সপা, বসপা-ও কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধী৷ কিন্তু এখনই এ নিয়ে অল আউট খেলতে রাজি নয় কেউই৷ সকলেই শীতকালীন অধিবেশনের দিকে তাকিয়ে৷ আর এ পরিস্থিতিতেই মমতার একলা চলো নীতি৷
অবশ্য পাশে তিনি পেয়েছেন শিবসেনাকে৷ সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমীকরণ আবার বদলাতে শুরু করেছে৷ কেন না তৃণমূলের সঙ্গে শিবসেনার গাঁটছড়ার অর্থ এনডিএ-তে ভাঙন৷ মমতার এই যাত্রায় সেই ভাঙনের সূত্রপাত দেখছে রাজনৈতিক মহল৷ মমতার দাবি, সংসদীয় গণতন্ত্র না মেনেই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ মোদি সরকারের বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রেরও অভিযোগ আনেন তিনি৷ এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল বলে অভিমত তাঁর৷ আর তাই সাধারণ মানুষের ভোগান্তির প্রশ্নে কোনওরকম রফায় রাজি নন তিনি৷ যদিও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির মতে, আগে সংসদে বিষয়টি উঠুক৷ রাষ্ট্রপতির কাছে এখনই গেলে, তিনি সরকারের পদক্ষেপের দিকেই হয়ত নজর রাখতে বলবেন৷ তাই ধীরে চলার নীতি নিয়েছে বিরোধীরা৷ কিন্তু ব্যতিক্রম মমতা৷ তিনি আগেভাগে বিষয়টি রাষ্ট্রপতির দরবারে জানিয়ে রাখতে চান৷
এদিকে কংগ্রেস সিপিএম এক্ষেত্রে আঞ্চলিক রাজনীতির দিকটিও মাথায় রাখছে৷ বাংলায় বিরোধিতার প্রশ্নেই মমতার নেতৃত্ব মেনে নিতে অসুবিধা আছে বলে নেতাদের একাংশের মত৷ সেক্ষেত্রে অবশ্য রাজনীতি পিছনে মানুষের স্বার্থকেই এগিয়ে রাখছেন মমতা৷ আর তাই কংগ্রেস বা সিপিএম যদি আলাদা করে রাষ্ট্রপতির কাছে যায় তা নিয়ে তাঁর কোনও সমস্যা নেই বলেও জানিয়েছেন৷
এদিনও মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা৷ জানান, মানুষের প্রতি বিশ্বাস নেই বলে হাতে কালি লাগানোর মতো কাজ করতে হচ্ছে প্রশাসনকে৷ সামনের উপনির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এরপর নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেবে৷ গোটা সিদ্ধান্ত যে পরিকল্পনাবিহীন তা আগেও বলেছিলেন৷ বস্তুত এদিনও সে কথাই বুঝিয়ে দিলেন৷ নোট বাতিল ইস্যুকে কেন্দ্র করে যে বিরোধী জোট তৈরি করতে চেয়েছিলেন মমতা, তা সঠিক চেহারা পেল না৷ কিন্তু বিরোধী ঐক্য তৈরি করার ক্ষেত্রে অনেকটাই সফল মমতা৷ যার প্রতিফলন পড়তে পারে সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশেন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.