সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের আস্থাভোট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তরজা তুঙ্গে। দু’পক্ষের দুই দুঁদে আইনজীবীর যুক্তি, পালটা যুক্তিতে সরগরম কোর্টরুম। মধ্যপ্রদেশে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে সরব হয়েছেন কংগ্রেসের আইনজীবী। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভের প্রশ্ন, “এটা কী ধরণের গণতন্ত্র, যেখানে বিধায়কদের অপহরণ করে রাখা হয়?” আবার পালটা বিজেপির আইনজীবী মুকুল রোহতগির সওয়াল, “জিততে পারবেন না জেনেই বারবার আস্থাভোট পিছিয়ে দিচ্ছেন কমলনাথ।” এহেন ‘কোর্টরুম ড্রামার’ মধ্যেই বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেলে বন্দী বিধায়করা সাফ জানিয়ে দিলেন, “দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে এক বছর অপেক্ষা করেছি। কিন্তু এখন আর কথা বলতে চাই না।” প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই ২২ বিধায়ক কংগ্রেস থেকে ইস্তাফা দিয়েছেন। তাঁদের সাফ কথা, “নিজেদের ইচ্ছেতেই পদত্যাগ করেছি। আর দলে ফিরতে চাই না।” এদিকে নাছোড় কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং বেঙ্গালুরু সেই হোটের বাইরে ধরনায় বসেন। শেষমেশ তাকে আটক করে সরিয়ে নিয়ে যায় কর্ণাটক পুলিশ। সবমিলিয়ে মধ্যপ্রদেশের সরকারের কুর্সি দখলের লড়াই এখন তুঙ্গে।
বিধায়কদের উদ্ধারের দাবিতে সু্প্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেস। সেই শুনানিতে মুকুল রোগতগির দাবি, “মধ্যপ্রদেশে সরকারে থাকার বৈধতা হারিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে গিয়েছে তাঁরা।” একইসঙ্গে বিজেপির আইনজীবীবর দাবি, যারা জরুরি অবস্থার সময় গণতন্ত্রের হত্যা করেছিল, তাঁদের সুবিচার চাওয়ার অধিকারই নেই। এদিকে রাজ্যপাল লালজি ট্যান্ডনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেসের আইনজীবী। তাঁর কথায়, অবৈধভাবে আস্থাভোটের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। দুষ্মন্তের কথায়, প্রথমে বিধায়কদের বেঙ্গালুরুতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল। তারপর তাদের পদত্যাগপত্র নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব স্পিকারের বাড়িতে গিয়ে সেগুলি দিয়ে এসেছেন। কোনও বিধায়ক সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর আরও অভিযোগ, “প্রধানমন্ত্রী মোদি বারবার কংগ্রেস-মুক্ত ভারত গঠনের কথা বলেছেন। সেই উদ্দেশ্যে যা খুশি তাই করছেন”। এরপরই কংগ্রেসের আইনজীবী বলেন, “আস্থাভোট নয়, ২২ আসনে পুনর্নির্বাচন করা হোক।” দু’পক্ষের সওয়াল জবাবের পর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, মধ্যপ্রদেশে স্পিকার ইস্তাফাপত্রগুলি পরীক্ষা করে দেখবেন।
এদিকে বিদ্রোহী বিধায়করা ভিডিওতে নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দেন। মধ্যপ্রদেশের মোরেনা জেলার সুমওয়ালির বিধায়ক আইদল সিং কানসানা বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি দিগ্বিজয় সিং আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। একবছর ধরে আমরা অপেক্ষা করেছি। তখন কেউ আমাদের কথা শোনেনি। এখন একদিনে তাঁরা কী শুনবেন?” উল্লেখ্য মঙ্গলবারই কংগ্রেসের বিদ্রোহী বিধায়করা সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন, তাঁরা কমল নাথের সরকারের কাজে অসন্তুষ্ট। কারও চাপে নয়, স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। তারপরই নড়েচড়ে বসে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারা। তড়িঘড়ি পাঠানো হয় দিগ্বিজয় সিংকে। কিন্তু, তিনিও বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করতে পারলেন না। এই পরিস্থিতিতে কমল নাথের সরকার বাঁচা নিয়ে সংশয় আরও বাড়ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.