সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জন্মের ১৫০ তম বছরে মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে দড়ি টানাটানিতে জড়াল শাসকদল বিজেপি ও বিরোধী কংগ্রেস। দেশ তথা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় মহাসমারোহে মহাত্মার জন্মবার্ষিকী পালন করছেন মানুষ। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে শাসক-বিরোধী প্রায় সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীরাই দিল্লির রাজঘাটে গিয়ে জাতির জনককে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকেই দিল্লির রাজপথে ‘গান্ধী সংকল্প যাত্রা’র সূচনা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তারপর গোটা দেশজুড়েই শুরু হয়ে যায় ১২০ দিনের এই কর্মসূচি। এর পাশাপাশি আজকে গোটা দেশজুড়ে পদযাত্রা করছে কংগ্রেস। দিল্লিতে আয়োজিত পদযাত্রায় অংশ নিতে দেখা যায় রাহুল গান্ধীকেও।
বুধবার সাতসকালেই রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও বিজেপি কার্যকরী সভাপতি জেপি নাড্ডা। পরে রাষ্ট্রপতি টুইট করেন, ‘গান্ধী জয়ন্তীর দিন বাপুকে শ্রদ্ধা জানাই। রাষ্ট্রপিতা মহাত্মা গান্ধীর ১৫০ তম জন্মবার্ষিকীর দিন আমাদের সত্য, অহিংসা, সৌভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি, নৈতিকতা ও সহজ জীবনযাপন জন্য শপথ নেওয়ার দিন। এসম্পর্কে তিনি যে বার্তা দিয়ে গিয়েছেন তা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। তিনি সবসময়ই এই বিষয়ে আমাদের পথপ্রদর্শক থাকবেন।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করেন, ‘বাপুর ১৫০ তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই। মানবতার প্রতি তাঁর অবদান চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা সত্যি করে নতুন বিশ্ব গড়ার কাজে এগিয়ে যাব আমরা।’ আজ আমেদাবাদে অবস্থিত সবরমতী আশ্রম গিয়েও একাধিক প্রকল্প এবং কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা আছে তাঁর। আজ থেকেই প্লাস্টিকমুক্ত ভারত গড়ার কর্মসূচি নিয়েছে কেন্দ্র। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধ করার জন্য নতুন নিয়মও চালু হয়েছে। এর পাশাপাশি বিজেপির তরফেও গোটা দেশজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে বিজেপিশাসিত বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা গান্ধীজির স্মৃতির উদ্দেশ্যে নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন। মুম্বইয়ের রাস্তায় স্বচ্ছ ভারত অভিযানে অংশ নিতে দেখা যায় মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিসকে। গান্ধীজির আদর্শকে জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল কংগ্রেসশাসিত রাজ্যগুলিতেও। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট থেকে শুরু করে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ এবং ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র বাঘেল গান্ধীজির আদর্শ রাজ্যের মানুষের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। আজকের ভারতে তাঁর জীবনধারা ও কর্মকাণ্ড কতটা জরুরি তার গুরুত্ব বোঝান।
পরিস্থিতি দেখে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, জাতির জনক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর সার্ধশত জন্মবার্ষিকীতে তাঁর আদর্শকে মেনে কারা চলছে তা প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা চলছে। মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ বাস্তবায়িত করতে কে কতটা উদগ্রীব তা দেশের জনগণকে বোঝাতে রীতিমতো দড়ি টানাটানি হচ্ছে দুটি দলের মধ্যে। যার একদিকে রয়েছে কংগ্রেস ও অন্যদিকে বিজেপি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.