Advertisement
Advertisement

Breaking News

রাহুলের হাত ধরেই উত্তরপ্রদেশে সাইকেল চালাবেন অখিলেশ

জোটে সমর্থন মমতার, নোট বাতিলের পর কি তবে বেকায়দায় বিজেপি?

Congress and SP will contest Assembly Elections in UP together
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 23, 2017 9:37 am
  • Updated:June 22, 2022 3:46 pm  

নন্দিতা রায় ও হেমন্ত মৈথিল, নয়াদিল্লি ও লখনউ: সোনিয়ার সূত্রে মিলল অঙ্ক৷

ঠিক হল, অবশেষে রাহুলের হাত ধরেই সাইকেল চালাবেন অখিলেশ৷ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের জোট পাকা হল৷ এই জোট অনেকদিক থেকেই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ৷ শেষবেলায় কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর আসরে নামা তো বটেই, সেই সঙ্গে সংগঠনে সফল নেত্রী হিসাবেও প্রতিষ্ঠা পেলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী৷ কারণ, গোবলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্য এবং জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্যে ক্ষমতাসীন সপা-র সঙ্গে কংগ্রেসের জোট গড়ার মূল দায়িত্বে ছিলেন তিনি৷ দুই দলের তরফে প্রথম থেকে সংযোগ রক্ষা করেছেন প্রিয়াঙ্কা এবং অখিলেশ যাদবের স্ত্রী সাংসদ ডিম্পল৷ সূত্রের খবর, শেষমেষ সোনিয়ার নির্দেশেই অখিলেশের সঙ্গে জোট নিয়ে সরাসরি আলোচনা করতে যান প্রিয়াঙ্কা৷ তাতেই মেলে রফাসূত্র৷ দলের নেতাদের মতে জোটের কারিগর প্রিয়াঙ্কাই৷ অন্যদিকে, সপার নেতৃত্বভার হাতে তুলে নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে সফল ও সন্তোষজনক জোট করাটা অখিলেশের কাছেও বড় চ্যালেঞ্জ ছিল৷

Advertisement

রবিবার লখনউয়ের তাজ হোটেলে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাজ বব্বর ও সপা-র রাজ্য সভাপতি নরেশ উত্তম আনুষ্ঠানিকভাবে জোটের কথা ঘোষণা করলেন৷ বিধানসভার ৪০৩ আসনের মধ্যে ২৯৮টি আসনে সপা এবং ১০৫ আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে বলেই দুই দলের মধ্যে আসন রফা হয়েছে৷৷ তবে, কোন আসনে কে প্রার্থী দেবে সেই বিষয়টি নিয়ে এদিন কিছু জানানো হয়নি৷ ইতিমধ্যে দুই দলই আলাদা আলাদা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে৷ তাতে, বর্তমানে কংগ্রেসের হাতে থাকা আসনেও সপা প্রার্থী দিয়েছে৷ এদিন এ প্রসঙ্গেই সপা-র জাতীয় সহ-সভাপতি কিরণময় নন্দ জানিয়েছেন, “কংগ্রেসের হাতে থাকা আসনগুলি থেকে আমরা প্রার্থী তুলে নেব৷” উল্লেখ্য, বর্তমানে সপার হাতে রয়েছে ২২৯টি আসন এবং কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ২৮টি আসন৷ এদিকে, সপা-কংগ্রেসের জোটকে সমর্থন জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি এই জোটের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন৷

কিছুদিন আগে দিল্লিতে কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধীর ও সপা-র জাতীয় সভাপতি অখিলেশ যাদবের মধ্যে বৈঠকের পরেই দুই দলের জোটের বিষয়টি শোনা গিয়েছিল৷ দিন এগনোর সঙ্গে সঙ্গে জোটের প্রক্রিয়াও এগোতে থাকে৷ কিন্তু চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে জোটে জট লেগে যায়৷ প্রথমে মহাজোটের কথা হলেও রাষ্ট্রীয় লোকদল তা থেকে বেরিয়ে যায়৷ পরে আসন রফা নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে সপা-র মতানৈক্য চরমে ওঠে৷ দুই দলই আলাদা আলদা ভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দেয়৷ জোটের ভবিষ্যত্‍ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে৷ অবশেষে শনিবার কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর হস্তক্ষেপে জোটের বিষয়টি পাকা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে৷ শুক্রবার সপা-র তরফ থেকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই দিল্লিতে রাহুলের সঙ্গে বৈঠক করেন সোনিয়া৷ পরে কংগ্রেসের নির্বাচন কমিটির বৈঠকে দলের নেতাদের সঙ্গেও জোট নিয়ে আলোচনা তিনি করেন৷ সোনিয়ার কথামতোই জোট প্রক্রিয়া এগোতে তৎপর হন কংগ্রেস নেতারা৷ অন্যদিকে লখনউয়ে অখিলেশও সপা নেতাদের জোট নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন৷ শনিবার বেশি রাতে রাহুল ও অখিলেশের মধ্যে আরও একদফা কথা হয় বলেও সূত্রের খবর৷

সপা-কংগ্রেস জোট হওয়াতে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে সমীকরণ পাল্টে গেল বলেই মনে করা হচ্ছে৷ বব্বর জানান, “এই জোটের উদ্দেশ্য রাজ্যে বিজেপিকে আটকানো৷ দুই দল একসঙ্গে হয়েছে৷ ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য এই জোট৷ এই জোট উত্তরপ্রদেশকে প্রগতির পথে নিয়ে যাবে৷” এই জোটের ফলে বিজেপির কতটা ক্ষতি হবে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা না গেলেও ত্রিমুখী লড়াইয়ে রাজ্যের ক্ষমতা দখল বিজেপির জন্য কঠিন হল বলেই মনে করা হচেছ৷ তবে জোটের ফলে মায়াবতীর দল বসপা-র ঘরে সংখ্যালঘু ভোটের সংখ্যা কমবে তা নিশ্চিত৷

আবার সপা-কং জোট হলেও এদিনই সপা-র নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করেছেন অখিলেশ৷ উল্লেখযোগ্যভাবে, সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না মুলায়ম সিং যাদব৷ তরুণদের স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে প্রাথমিক স্কুলের বাচ্চাদের মাসে এক কেজি করে ঘি, শিশুদের মাসে এক কেজি করে গুঁড়ো দুধ, গরিব মহিলাদের প্রেশার কুকার ও পেনশন যোজনার মাধ্যমে রাজ্যের এক কোটি লোককে মাসে এক হাজার টাকা করে পেনশনের প্রতিশ্রুতি রয়েছে সপার ইস্তাহারে৷ জানা গিয়েছে, কংগ্রেসও খুব শীঘ্র আলাদা ইস্তাহার প্রকাশ করবে৷

ইস্তেহার প্রকাশের অনুষ্ঠান শুরুর সময় মুলায়ম সিং যাদব বা শিবপাল কেউই সেখানে ছিলেন না৷ বাবাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিয়ে আসার জন্য আজম খানকে মুলায়মের বাড়িতে পাঠান টিপু৷ স্ত্রী ডিম্পল ও অন্য নেতাদের পাশে নিয়েই অখিলেশ ইস্তেহার প্রকাশ করেন৷ পরে আজম খান অনেক বোঝানোর পরে ইস্তেহারে প্রকাশের পরে দলীয় দফতরে আসেন মুলায়ম৷ বাবার সঙ্গে দেখা করতে সস্ত্রীক তাঁর দফতরের ঘরে হাজির হন টিপু৷ পরে সেখান থেকে তাঁদের সকলকে একসঙ্গে হাসিমুখেই বেরোতে দেখা গিয়েছে৷ আপাতত হাসতে দেখা গেলেও এরপরে মুলায়ম ইস্তাহার নিয়ে নতুন কোনো বোমা ফাটাবেন কি না, সেনিয়ে চিন্তায় রয়েছেন অখিলেশ শিবিরের নেতারা৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement