সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলতি বছরের শেষের দিকেই গুজরাটে বিধানসভা নির্বাচন (Gujarat Assembly Election)। আগামী বছরে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে ভোট রয়েছে। পরপর নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এবার আদিবাসী ভোট টানতে উদ্যোগী বিজেপি-কংগ্রেস দু’দলই। পশ্চিম ভারতের ভিল প্রজাতির স্বার্থের কথা মনে করিয়ে তাদের সমর্থন জোগাড় করতে উদ্যোগী হয়েছে কংগ্রেস (Congress) ও বিজেপি (BJP)। সেই সঙ্গে স্থানীয় দল বিটিপি-র (ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টি) উত্থানকেও আটকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দুই শিবির। সব মিলিয়ে, ভিলদের মন জয় করতে কোনও চেষ্টাই বাদ দিচ্ছে না সরকার ও বিরোধী দল।
১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডেরও ছয় বছর আগে আরেকটি গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল ভারতের বুকে। ভিল আদিবাসী প্রজাতির শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছিল ব্রিটিশ সেনা। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছিল রাজস্থান ও গুজরাট সীমান্তের মানগড় পাহাড়ে। ১৯১৩ সালের ১৭ নভেম্বরের এই ঘটনাকে ‘আদিবাসী জালিয়ানওয়ালাবাগ’ বলেও অভিহিত করা হয়। ঘটনার একশো বছরেরও বেশি সময় কেটে যাওয়ার পরে রাজস্থান ও গুজরাট সীমান্তে অবস্থিত মানগড় ধাম ঘিরেই মূলত ভোটবাক্সের লড়াই আবর্তিত হচ্ছে।
চলতি বছরের আগস্ট মাসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। মানগড় ধামের স্মৃতিসৌধকে ‘ন্যাশনাল মনুমেন্ট’ হিসাবে ঘোষণা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি আবারও সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে গেহলটের তরফ থেকে। প্রসঙ্গত, রাজস্থান, গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশ- এই তিন রাজ্যের ভিল আদিবাসীরা মানগড়ের স্মৃতিসৌধকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। সেই জন্যই মানগড়কে সম্মান দিতে উঠে পড়ে লেগেছে কংগ্রেস-বিজেপি দু’দলই। আগামী ১ নভেম্বর মানগড় সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। তার ঠিক আগেই মোদিকে চিঠি লিখে নিজের দাবির কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন গেহলট।
শুধু মানগড় স্মৃতিসৌধই নয়, দুই দলের মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে স্থানীয় দল বিটিপির উত্থান। ২০১৭ সালে তৈরি হওয়া এই দলের লক্ষ্য, ভিল সম্প্রদায়ের সকলকে একত্রিত করে পৃথক ভিল প্রদেশ গড়ে তোলা। মূলত মানগড়কে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী চারটি রাজ্যের কিছু অংশ নিয়ে এই নতুন প্রদেশ গড়ে তোলা হবে। এই দাবির ফলে ভিল প্রজাতির মধ্যে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিটিপি। রাজস্থানের আঞ্চলিক নির্বাচনেও এই জনপ্রিয়তার প্রভাব পড়েছে। সব মিলিয়ে, মানগড় নিয়ে রাজনৈতিক সক্রিয়তা বেড়েই চলেছে। সূত্র মারফত জানা যায়, হয়তো কিছুদিনের মধ্যে মানগড় স্মৃতিসৌধকে ন্যাশনাল মনুমেন্ট ঘোষণা করে দেওয়া হতে পারে। তারপরে অবশ্য সেই ঘটনার কৃতিত্ব নিয়ে লড়াই শুরু হবে কংগ্রেস-বিজেপির মধ্যে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.