সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মান্দসৌরে কৃষকদের ওপর গুলি চালানো নিয়ে বিতর্ক, দমন-পীড়নের অভিযোগ। এই ঘটনা নিয়ে সরকার থেকে বিরোধী, সবপক্ষই নিজেদের কৃষকদরদী প্রমাণে ব্যাকুল হয়ে পড়েছে। যাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই শিবরাজ সিং চৌহান নিজেই শান্তি ফেরাতে বসে গিয়েছেন অনশনে। একদিনের মধ্যেই অনশনে দাঁড়িও টেনে দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। অনেক দিন পর হাতে গরম ইস্যু পেয়ে কংগ্রেসও নেমে পড়েছে ময়দানে। অনশনের পাল্টা হিসাবে সত্যাগ্রহ কর্মসূচি নিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের দাপুটে কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।
কৃষক মৃ্ত্যু নিয়ে তোলপাড় বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ। ঘটনার পর থেকেই প্রচার মুখ অনেকটাই কেড়ে নিয়েছে কংগ্রেস। খোদ কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী মধ্যপ্রদেশে ঢোকার চেষ্টা করে কংগ্রেস কর্মীদের চাঙ্গা করেছেন। রাহুলের টনিকে গা-ঝাড়া ভাব কাটিয়ে মধ্যপ্রদেশ জুড়ে আন্দোলনে নেমেছে কংগ্রেস। ঘটনার পর প্রায় দু’দিন প্রচারের অভিমুখ ছিল কংগ্রেসের দিকে। বিজেপি সরকারের ভূমিকায় সরব হয়ে রাজ্য জুড়ে ঝড় তুলেছিল সোনিয়া গান্ধীর দল। অবশেষে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামে বিজেপি শিবির। খোদ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান শনিবার আমরণ অনশনে বসেন। নিজেকে কৃষকবন্ধু হিসাবে প্রমাণ করতে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জানান, বহু কৃষিজীবী পরিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। কথা বলে পরিবারগুলি আশ্বস্ত হয়েছে। কৃষকরা তাঁকে নাকি জানিয়েছেন আর অশনের প্রয়োজন নেই। এই বলে এক দিনের মধ্যেই অনশন ভাঙার রাস্তা করে ফেলেছিলেন শিবরাজ। রবিবার দুপুরেই অনশন প্রত্যাহার করে নেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। একাধিক সংগঠনের দাবি মেনে অবশেষে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে তিনি দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শিবরাজের এই চালের জবাব নিজস্বভাবে দিয়েছে কংগ্রেস। মহাত্মা গান্ধীর দেখানো পথে সত্যাগ্রহ শুরু করছে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস শিবির। দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা তথা গুনার সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এই কর্মসূচি নিয়েছেন। রাহুল গান্ধী ঘনিষ্ঠ জ্যোতিরাদিত্য রাজ্যের নানা প্রান্তে কংগ্রেস কর্মীদের শান্তিপূর্ণ পদ্ধতি আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। বিজেপি সরকারকে চেপে ধরতে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলেছে কংগ্রেস। এর মধ্যে বিতর্ক বাড়িয়েছেন ওই রাজ্যের বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। মান্দসৌরের ঘটনা বিশাল কোনও ইস্যু নয়, বলে জল আরও ঘুলিয়েছেন কৈলাস।
অনশনের জবাব সত্যাগ্রহ। মধ্যপ্রদেশে জুড়ে এখন এমনই দড়ি টানাটানি। মুখে অনেক কিছু বললেও, এখনও নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কোনও পক্ষেই সেভাবে দেখা করতে উঠতে পারেনি। দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের এই কার্যকলাপে কৃষকদের কণ্ঠস্বর আরও চাপা পড়ে যাচ্ছে কিনা সেই প্রশ্ন ঘুরছে রাজ্য জুড়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.