সুব্রত বিশ্বাস: এ যেন ‘হ্যামক’-এ বিশ্রাম। সমুদ্রতটে বালুকারাশিকে তুড়ি মেরে হ্যামকে দুলে বিশ্রামের দৃশ্য আমাদের কাছে খুব পরিচিত। তবে ট্রেনের কামরায় কৃত্রিম হ্যামকে যাত্রীর ঝুলে যাওয়ার দৃশ্যটা খুব একটা পরিচিত নয়। তবে সংরক্ষিত টিকিট না মেলায় বহু মানুষই এখন ট্রেনের কামরায় চাদর, গামছা দিয়ে ‘হ্যামক’ তৈরি করে ঝুলিয়ে দিচ্ছে। নিশ্চিন্তে যাত্রাও করছেন। ওড়িশা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরুগামী ট্রেনগুলিতে এভাবে ভ্রমণ করার প্রবণতা থাকলেও এখন হাওড়া যাতায়াতকারী বহু ট্রেনেই এই চাদর, গামছা, লুঙ্গি ব্যবহার করে হ্যামক তৈরি করে যাত্রা করছেন অনেকেই।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কমার্শিয়াল বিভাগের কর্মীরা জানিয়েছেন, করমণ্ডল, যশবন্তপুর এক্সপ্রেস, ভদ্রক প্যাসেঞ্জারের অসংরক্ষিত কামরায় এই ধরনের হ্যামক বাবহার করা হচ্ছে। অসংরক্ষিত কামরায় বেশি সংখ্যায় এই ধরণের হ্যামক তৈরি করা হলেও বাদ যাচ্ছে না সংরক্ষিত কামরাও। দু’টি পাশাপাশি বার্থে চাদরের চারটি কোনা বেঁধে দোলনার মতো করে ঝুলিয়ে তাতেই শুয়ে নিশ্চিন্ত যাত্রা। এই হ্যামকের ঠেলায় যাত্রীরা চরম অসুবিধার মধ্যে পড়লেও আইনত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
কমার্শিয়াল কর্মীদের কথায়, বৈধ টিকিট থাকায় আইনত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। অসংরক্ষিত কামরায় সিটিং গ্যারান্টি যেমন দেওয়া হয় না, তেমনই অন্য কোনওরকমভাবে যাত্রা করলেও তার বিরুদ্ধাচারণও সম্ভব নয় আইন না থাকায়। তবে সংরক্ষিত কামরায় এভাবে যাত্রা করা যায় না। কারণ, সেখানে সিটিং ব্যবস্থা করেই টিকিট দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, ঝুলন্ত এই হ্যামকে যাতায়াতে চরম অসুবিধা হয়। দু’একটি নয়, একটি কামরায় সার দিয়ে এই হ্যামক তৈরি করে যাত্রা করেন অসংখ্য যাত্রী। আরপিএফ কর্তাদের কথায়, এই হ্যামক তৈরির বিষয়টি কোন ধরনের অপরাধ তা এখনও আইনের পর্যায়ে আসেনি। ফলে যাত্রী ধরে অভিযোগের মুখে পড়তে চায় না আরপিএফ। কৃত্রিম এই হ্যামক তৈরি করার সময় এতটাই মজবুত গিঁট দেওয়া হয় চাদরে যে, নামার সময় সেই গিঁট খুলতেই পারেন না যাত্রী। ফলে চাদর, গামছা ওইভাবে ছেড়েই যাত্রীরা নেমে পড়েন। কারশেডে ট্রেনটি আসার পর ছুরি দিয়ে তা কেটে নামাতে হয় সাফাই কর্মীদের। রেল অবশ্য এই ধরনের কাজের প্রতিবাদ করতে পারছে না বলে জানিয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মু্খ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ জানিয়েছেন, হ্যামক তৈরি করা যাত্রী তো আইন ভাঙছেন না যে, রেল তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.