সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সরকার ও মৎস্যজীবীদের লড়াই। আর মাঝখান থেকে বাসস্থান হারাচ্ছে চেন্নাই উপকূলের অলিভ কচ্ছপরা। কখনও উন্নয়নের নামে বস্তি উচ্ছেদ। কখনও বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে গরম জল সরাসরি সমুদ্রে মিশছে। লবণাক্ত জলের উষ্ণতা বাড়ছে। আর তাতেই জীবিকা হারাচ্ছেন দিন আনা দিন খাওয়া মৎস্যজীবীরা। সেইসঙ্গে গরম জলের ছেঁকা খাচ্ছে কচ্ছপরাও।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি চেন্নাইয়ের উপকূল সংলগ্ন প্রায় ১০০টি বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, মন্দির নির্মাণ করা হবে। এর জেরেই বাস্তুহারা হতে হচ্ছে অলিভ রিডলে কচ্ছপদের, এমনই মনে করছেন পরিবেশবিদরা। তাঁদের চিন্তা অবশ্য আরও আছে। মৎস্যজীবীদের স্থানান্তরের কারণেই নাকি অলিভ কচ্ছপদের বংশবৃদ্ধি হচ্ছে না। উন্নয়নের নামে সমুদ্রের জল দূষিত হচ্ছে। বছরের যে বিশেষ সময় লবণাক্ত জলে কচ্ছপের বংশবৃদ্ধি হওয়ার কথা, জলস্তরের উষ্ণতাবৃদ্ধির কারণে সেটাও ঠিকমতো হচ্ছে না বলেই বুঝতে পেরেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।
চেন্নাইয়ের তিরুভানমিউয়ের সমুদ্র সৈকত। যেখানে চারশো বর্গফুট জায়গার দাম ৬০ লক্ষ টাকা। এমন জায়গার আরও উন্নয়ন হবে, তাতে কারও সন্দেহ নেই। তবে অলিভ কচ্ছপের ঘর ভেঙে উন্নয়নে প্রকৃতির ভারসাম্য কতটা নষ্ট হবে, তা নিয়ে চিন্তিত পরিবেশবিদরা। চেন্নাইয়ের এক পরিবেশবিদের কথায়, ‘‘উন্নয়নের নামে ঘর ভাঙা বেশিদিন চলতে পারে না। যাঁরা গৃহহারা হচ্ছেন, কেউ তাঁদের খোঁজ রাখে না। অন্যদিকে, ওই মানুষগুলোর জন্য আমরা ভাল আছি। সরকারের উচিত মৎস্যজীবী ও প্রকৃতির কথা ভাবা।’’
পরিবেশবিদ আরও জানান, চেন্নাই কর্পোরেশন যেভাবে একের পর এক বাড়ি ভাঙছে সেটা ঠিক হচ্ছে না। তামিলনাড়ু জুড়ে ৩ হাজার মৎস্যজীবীদের গোষ্ঠী রয়েছে। এইভাবে বেছে বেছে মৎস্যজীবী গোষ্ঠীকে আক্রমণ করার পিছনে কী অর্থ থাকতে পারে, সে নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। কারণ, মৎস্যজীবীদের উচ্ছেদ করলেও কেউ তো ওঁদের পুনর্বাসনের কোনও উপায় দেখছে না। উলটে সমুদ্রের ক্ষতি করে কচ্ছপদেরও অসুবিধার কারণ তৈরি করা হচ্ছে। তাতেই অশনি সংকেত দেখছেন পরিবেশবিদরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.