সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া বাজেট। সম্পূর্ণ মূল্যহীন। ২০১৯-২০র অন্তর্বর্তী বাজেট নিয়ে এমনই প্রতিক্রিয়া দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদে বাজেট ঘোষণা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। বলেন, ‘এই সরকারের মেয়াদ শেষ হতে আর ১ মাস বাকি। এর মধ্যে অন্তর্বর্তী বাজেটের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব না। এর কী মূল্য? একেবারে মূল্যহীন বাজেট। কেন এটা পেশ করা হল, বুঝতে পারছি না। মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া ওষুধের মতো এটা মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া বাজেট।’
অন্তর্বর্তী বাজেটের সমালোচনায় মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন,‘আমি অর্থনীতিবিদ নই। তাই খুঁটিনাটি দিকগুলো নিয়ে বলতে পারব না। কিন্তু আমিও সংসদে কাজ করেছি অনেকে। বাস্তব বুদ্ধি, অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এই বাজেটে আর্থিক আয় বৃদ্ধির কোনও দিশা নেই। দেশের আর্থিক পরিস্থিতি কেমন, তা এই মুহূর্তে কেউ ঠিকমতো জানে না। নোটবাতিল, জিএসটি-র পর এমনিতেই কাজের পরিবেশ, পরিকাঠামো নষ্ট হয়ে গেছে। এই বাজেটে সরকার কর্মসংস্থানের বিষয়টি সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেছে।’
[অন্তর্বর্তী বাজেট ২০১৯-২০: কিছু প্রশ্ন, কিছু সংশয়]
অন্তর্বর্তী বাজেটে ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল কেন্দ্রে স্বাস্থ্য প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারতের সাফল্যের কথা ঘোষণা করেছেন। জানিয়েছেন, ‘বিশ্বের বৃহত্তম চিকিৎসা পরিষেবা এটি। ৫০ কোটি মানুষ এর সুবিধা পাচ্ছেন।’ এখানে মুখ্যমন্ত্রী আরও তীব্র করেছেন সমালোচনা। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের পুরোপুরি নকল করে তৈরি হয়েছে আয়ুষ্মান ভারত। এমনিতেই দুটি প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত রয়েছে। আয়ুষ্মান প্রকল্পের টাকা কেন্দ্র এবং রাজ্যের ৬০:৪০ অনুপাতে দেওয়ার কথা। এবং কার্ডে স্পষ্ট তার উল্লেখ থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে, এরাজ্যে যে আয়ু্ষ্মান প্রকল্পের কার্ডগুলিতে রাজ্যের অবদানের কোনও উল্লেখ নেই। যা দেখে এটা মনে হওয়া স্বাভাবিক যে প্রকল্পটি সম্পূর্ণ কেন্দ্রের। এর প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দিন কয়েক আগেই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প বাতিল করে ১০০ শতাংশ টাকা রাজ্য সরকারই দেবে বলে ঘোষণা করেছেন। এরপর আজ অন্তর্বর্তী বাজেটে এনিয়ে আলোচনার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের নকল আয়ুষ্মান ভারত। এতদিন পর ওঁদের গরিবদের কথা মনে পড়েছে। তাঁদের জন্য প্রকল্পের কথা ঘোষণা করছে। এটা ৪ বছর আগে করলে, ভাল লাগত। এখন টুকলি করে কোনও লাভ নেই।’
[কথা রাখলেন মোদি, বলিউডে পাইরেসি আটকাতে বড় ঘোষণা কেন্দ্রের]
এছাড়া তাঁর আরও অভিযোগ, ‘ওঁরা এমনভাবে সব প্রচার করছে, যেন প্রধানমন্ত্রীই সব করছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা কোনও কাজ করে না। যদি তাইই হয়, তাহলে উনিই সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রিত্ব, প্রধানমন্ত্রিত্ব সামলান।’ এভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় আঘাত করা হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, অন্তর্বর্তী বাজেটে কৃষকদের জন্য ঘোষণা প্রকৃতপক্ষে দেখনদারি। এর চেয়ে অনেক বেশি কৃষক বান্ধব প্রকল্প হতে পারত। বাজেটে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ এবং কালো টাকা উদ্ধারের কোনও দিশা নেই বলেও এর সমালোচনা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.